কানাডার আদিবাসী স্কুলে আবারও মিললো শিশুদের কবর

কানাডার পুরনো আদিবাসী আবাসিক স্কুলে আবারও শিশুদের কবরের খোঁজ মিলেছে। দেশটির সাসকাচেওয়ান প্রদেশে কোনও চিহ্ন না থাকা এসব কবরের খোঁজ পেয়েছে একটি আদিবাসী গ্রুপ। বুধবার কাওয়েসসেস ফার্স্ট নেশন এই খবর জানালেও ঠিক কতটি কবর পেয়েছে তা জানায়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত মাসে কানাডার একটি পুরনো আবাসিক স্কুলের ভবন থেকে ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস এলাকায় এসব দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। এসব শিশু আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান বলে জানা যায়।  ওই স্কুলটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

১৯ ও ২০তম শতাব্দীতে আদিবাসী শিশুদের সভ্য করে তোলার নামে পরিচালিত হতো এসব আবাসিক স্কুল। কানাডার সরকার ও ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ এসব স্কুল পরিচালনা করতো। এসব স্কুলে শিশুদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ছিলো। গত মাসে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় আদিবাসী শিশুদের দেহাবশেষ পাওয়ার পর সাসকাচেওয়ান প্রদেশের পুরনো এসব স্কুলের কবর শনাক্তের উদ্যোগ নেয় কাওয়েসসেস ফার্স্ট নেশন।

গ্রুপটি এই কবরের সন্ধান পাওয়াকে ভয়াবহ এবং হৃদয়বিদারক আখ্যা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের অনুসন্ধানের আরও বিস্তারিত জানানোর ঘোষণা দিয়েছে গ্রুপটি।

অ্যাসেম্বলি অব ফার্স্ট নেশনের ন্যাশনাল চিফ পেরি বেলেগ্রেড এক টুইট বার্তায় বলেন, এসব কবরের সন্ধান পাওয়া কষ্টদায়ক কিন্তু বিস্ময়কর নয়। এই চরম কঠিন ও আবেগী মুহূর্তে ফার্স্ট নেশনের পাশে থাকতে কানাডিয়ার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১৮৬৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেড় লক্ষাধিক আদিবাসী শিশুকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে এসব আবাসিক স্কুলে পাঠানো হয়। এসব শিশুদের নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি চর্চার অনুমতি ছিলো না। অনেক শিশুই নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়।

এসব স্কুলের প্রভাব খতিয়ে দেখতে ২০০৮ সালে গঠন করা একটি কমিশনের প্রতিবেদনে জানা যায়, আবাসিক স্কুলে যাওয়া লাখ লাখ শিশু আর কখনওই নিজ বাড়িতে ফেরেনি। ওই প্রতিবেদনের পর এই ব্যবস্থার জন্য আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ করে কানাডা।