কানাডায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতি ইমামদের সংহতি

কানাডায় খ্রিস্টীয় গির্জা পরিচালিত বোর্ডিং স্কুলগুলো সহস্রাধিক অচিহ্নিত কবর শনাক্তের ঘটনায় আদিবাসী জনগণের প্রতি সংহতি ও সহমর্মিতা জানিয়েছেন স্থানীয় মুসলিম ইমামরা। শুক্রবার ওন্টারিওর লন্ডন মুসলিম মসজিদের ইমার আরিজ আনওয়ার ফেসবুকে সরাসরি প্রচারিত এক বক্তব্যে বলেন, এখানকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের ব্যথা আমাদের সবার অনুধাবন করা উচিত। কারণ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কী করে তা নিজেদের দেশে আমরা দেখেছি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

শুধু আনওয়ার নন। শুক্রবার কানাডার ৭৫ জন ইমামও সংহতি জানিয়েছেন আদিবাসী মানুষদের প্রতি। সমন্বিত এই উদ্যোগ নেয় দ্য কানাডিয়ান কাউন্সিল অব ইমামস এবং জাস্টিস ফর অল কানাডা। সচেতনতা তৈরির জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এক বিবৃতিতে ইমামরা লিখেছেন, কয়েক হাজার নিষ্পাপ শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার‑ এদেরকে পরিবারের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, নিপীড়ন, নির্যাতন ও অভুক্ত রাখা হয়েছে কয়েকটি ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের নামে। যা আমাদের ব্যথা ও লজ্জায় বিমূঢ় করে তুলেছে।

শুক্রবার জুমার নামাজে ইমাম আনওয়ার মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আদিবাসী মানুষদের প্রতি সংহতি জানানোর জন্য। তিনি তুলে ধরেছে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ কর্তৃক ভারত ও পাকিস্তানকে আলাদা করার কাহিনীও।

তিনি বলেন, আমাদের সবার প্রায় একই ধরনের কাহিনী রয়েছে জীবনে। আমি এটি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি। তাই যদি কোনও সম্প্রদায় সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিক ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ব্যথা বুঝতে পারে সেটা আমরা। আর তাই আদিবাসী মানুষের জন্য আমাদের সহমর্মিতা অনেক বেশি হওয়া উচিত। কারণ আমরা তাদের মতো বুঝতে এর আসল যন্ত্রণা।

উল্লেখ্য, ১৯ ও ২০তম শতাব্দীতে আদিবাসী শিশুদের সভ্য করে তোলার নামে পরিচালিত হতো ১৩০টিরও বেশি আবাসিক স্কুল। কানাডার সরকার ও ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ এসব স্কুল পরিচালনা করতো। এসব স্কুলে শিশুদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ছিল। গত মে মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস এলাকার একটি পুরনো আবাসিক স্কুলের ভবন থেকে ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। পরের মাসে সাসকাচেওয়ান প্রদেশের পুরনো একটি আদিবাসী আবাসিক স্কুলে মেলে ৭৫১টি কোনও চিহ্ন না থাকা কবর। সর্বশেষ ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যের ক্রানব্রুক এলাকার একটি স্কুলের কাছে আরও ১৮২টি কবর পাওয়া যায়।