গুয়াতেমালায় সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার ঐতিহাসিক রায়

গুয়াতেnonameমালায় তিন যুগ আগে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হওয়ার প্রথমবারের মতো ধর্ষণের অভিযোগের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েকজন উপজাতীয় নারীকে যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ ও খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দুই সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ৩৬০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। শনিবার এ রায় ঘোষণা করা হয়।ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ খবর নিশ্চিত করেছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, দেশটির একটি সামরিক ঘাঁটির সাবেক কমান্ডার ফ্রান্সিসকো রায়েস জিরন ও মিলিটারি কমিশনার হেরিবার্তো ভারদেজ আসিজ।
১৫ নারীকে দীর্ঘদিন ধরে যৌনদাসী করে রাখা, যৌন নির্যাতন করা, ধর্ষণ করা এবং একজন নারী ও তার দুই মেয়েকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন অবসরপ্রাপ্ত ফ্রান্সিসকো রায়েস জিরন। জিরনের মতো একই ধরনের অপরাধের পাশাপাশি সাত নারীকে গুম করার ঘটনায় হেরিবার্তো ভারদেজ আসিজকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত।
বামপন্থী গেরিলা বাহিনীর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে ১৯৮০ দশকের দিকে সিপুর জারকা অঞ্চলে অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময় সেখানকার আদিবাসী নারী ও শিশুদের ধরে নিয়ে গিয়ে যৌন নিপীড়ন নির্যাতন চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

নির্যাতনের শিকার অগাস্টিন চেন নামের এক আদিবাসী বলেন, ‘সেনারা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি সেলে বন্দি রেখে প্রতিদিন নির্মম নির্যাতন করত। তারা আমার চোখের সামনে সাতজনকে হত্যা করে। তাদের মৃতদেহগুলো যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানে দুইটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে উড়িয়ে দেওয়া হয়।’

ধর্ষণের শিকার হওয়া ৭০ বছরের এক নারী ডেমিসিয়া ইয়াক বলেন, ‘আমাদের ধর্ষণ করা হতো, সবকিছুই ঘটতো, যদি আমরা আমাদের স্বামীদের অবস্থান জানানোর মতো বিষয়গুলো বলতে না পারতাম। আমরা সত্যিই জানতামও না তারা কোথায় রয়েছে।’  

রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণের মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও আনন্দের প্রতিক্রিয়া ছিল। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন দেশটির নোবেলজয়ী রিগোবার্তা মেনচু। তিনি বলেন, ‘এটা ঐতিহাসিক। এটা নারীদের জন্য, সর্বোপরি নিপীড়নের শিকার হওয়া সবার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’ সূত্র: বিবিসি।

/এএ/