বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকার স্থগিতের নির্দেশ দিলো যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোকে শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির (এফ,এম,জে) ভিসার সাক্ষাৎকারের শিডিউল দেওয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। শিগগিরই বিদেশি আবেদনকারীদের জন্য কঠোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের প্রক্রিয়া চালু করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মঙ্গলবারের এক ক্যাবল বার্তায় বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কোনও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারণ করা যাবে না।

নতুন এই নির্দেশনা আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল এবং যেগুলোকে ট্রাম্প প্রায়ই ‘চরম বামপন্থি’ বলেও অভিযুক্ত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করেনি।

পররাষ্ট্র দফতরের ক্যাবল বার্তায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান অপারেশন এবং ভেটিং প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণের বিস্তৃত রূপ শিগগিরই জারি করা হবে।

এই প্রক্রিয়ার আওতায় আবেদনকারীদের ইনস্টাগ্রাম, এক্স (সাবেক টুইটার), টিকটকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে করা পোস্ট, শেয়ার ও মন্তব্য খতিয়ে দেখা হবে। যাতে করে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।

মার্চ থেকে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে জড়িতদের লক্ষ্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাধ্যতামূলক পর্যবেক্ষণ শুরু হয়। সেখানে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি সমর্থন’ সংক্রান্ত প্রমাণ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ‘বিতর্কিত’ পোস্ট ডিলিট করলেও সেগুলোর স্ক্রিনশট সংরক্ষণ করতে বলা হয় কনসুলার অফিসারদের।

ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও সম্প্রতি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মার্চে এই সংখ্যা ছিল তিনশোর বেশি।

এনএএফএসএ -এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেছেন। এই শিক্ষার্থীরা ৪৩.৮ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে যোগ করেছেন এবং ৩ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানে সহায়তা করেছে। নতুন এই ভিসা স্থগিতাদেশ আন্তর্জাতিক শিক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সংকটকে আরও গভীর করতে পারে।