যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের গাজায় আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনের কারণে আটক হওয়া কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল মুক্তি পেয়েছেন। তিন মাসেরও বেশি সময় কারাগারে থাকার পর তাকে মুক্তি দিয়েছে মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। লুইজিয়ানার জেনা শহরে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বন্দিশালায় আটক থাকা খলিল ছিলেন গ্রেফতার হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত। তিনি শেষ ব্যক্তি হিসেবে আটক ছিলেন।
শুক্রবার বিকেলে নিউ জার্সির ফেডারেল বিচারক মাইকেল ফারবিয়ার্জ খলিলের মুক্তির নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, খলিলের পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই এবং তিনি জনসাধারণের জন্য কোনও হুমকি নন। এটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
৩০ বছর বয়সী খলিলকে মার্চের শুরুতে নিউ ইয়র্কে তার অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের লবিতে সাদা পোশাকে মার্কিন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা গ্রেফতার করেছিলেন। তখন থেকে তাকে দক্ষিণাঞ্চলীয় জেনা বন্দিশালায় রাখা হয়।
মুক্তির পর সাংবাদিকদের খলিল বলেন, অবশেষে ন্যায়বিচার হয়েছে, কিন্তু এতে তিন মাস সময় লাগা এক ধরনের ব্যর্থতা। আমি এমন এক জায়গা থেকে বেরিয়ে এলাম যেখানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ অন্যায়ভাবে বন্দি।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি ছিল, খলিলের ফিলিস্তিনপন্থি কার্যকলাপ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কিন্তু এ বিষয়ে তারা কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। উল্টো খলিলের পক্ষে বহু ইহুদি শিক্ষার্থী ও অধ্যাপক আদালতে লিখিত বক্তব্য দেন। খলিল নিজেও সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি ও ইহুদি জনগণের মুক্তি পরস্পরের সঙ্গে জড়িত।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে খলিল বলেন, তারা ভুল মানুষকে টার্গেট করেছে। কোনোভাবেই গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য কাউকে আটক করা যায় না।
আদালতের আদেশে খলিলকে তার পাসপোর্ট ও গ্রিনকার্ড আইসের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি নিউ ইয়র্কসহ কিছু নির্দিষ্ট অঙ্গরাজ্যে ভ্রমণের অনুমতি পাবেন। অভিবাসন মামলাটি চলবে আলাদাভাবে।
খলিলের গ্রেফতারকে প্রথম সংশোধনীতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ এক বিবৃতিতে এই আদেশকে বিলম্বিত ন্যায় হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প প্রশাসনকে দ্রুত তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
খলিলের স্ত্রী, মার্কিন নাগরিক নূর আবদাল্লাহ বলেন, এই রায় আমাদের পরিবারের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের চাপা অন্যায়গুলোর অবসান ঘটায়নি, তবে আমরা অন্তত মাহমুদকে আবার কাছে পাচ্ছি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান