যুদ্ধ এলাকায় পাওয়া ক্লাস্টার বোমা সরকারি নয়: দাবি শ্রীলঙ্কার

nonameশ্রীলঙ্কার যুদ্ধ কবলিত অঞ্চলে পাওয়া ক্লাস্টার বোমা সরকারি অস্ত্র এবং তা সরকারই ব্যবহার করেছে এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান প্রথম এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দাবি করা হয়েছিল, যুদ্ধের সময় শ্রীলঙ্কার সরকারই ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে। উদ্ধার হওয়া ক্লাস্টার বোমার ছবিও প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি।

গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার মুখপাত্রের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে তিনি এসব অস্ত্রের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সরকারি বাহিনীর সম্পৃক্ততার বিষয় অস্বীকার করেছেন।

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে বলেন, ছবিতে যে এলাকা দেখা যাচ্ছে তা যে শ্রীলঙ্কার ভূমি তা কীভাবে জানলেন? কীভাবে আপনারা বলছেন যে এসব বোমা শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর? এটার ভিত্তি কী?

সেনারত্নে ইঙ্গিত করেন, এসব যুদ্ধাস্ত্র লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল এলাম (এলটিটিই) দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সময় সরকারের বিরোধিতায় ব্যবহার করে থাকতে পারে। তিনি বলেন, সেখানে ক্লাস্টার বোমা থাকতে পারে। কিন্তু কীভাবে আপনারা বলছেন এগুলো সেনাবাহিনী কিংবা এলটিটিই সেনাদের?

হালো ট্রাস্ট নামক বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাইন নিষ্ক্রিয়করণ সংস্থার সাবেক এক কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে ক্লাস্টার বোমা ছবি সরবরাহ করেন। যদিও ফাঁস হওয়া এ ছবিকে কখনোই অনুমোদন করেনি সংস্থাটি। ছবিতে পাওয়া যন্ত্রকে ক্লাস্টার বোমা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ।

তবে গার্ডিয়ানের সঙ্গে আলোচনায় হালো নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে পাচ্চিপাল্লিতে ৩২ টি ক্লাস্টার বোমা পাওয়া গিয়েছে। যুদ্ধের শেষ দিকে এ এলাকাতেই শ্রীলঙ্কার সেনা বাহিনী ও এলটিটিইদের মধ্যে ভয়ঙ্কর লড়াই হয়েছিল। সংস্থাটি জানায়, উদ্ধার হওয়া এসব যুদ্ধোপকরণগুলো সরকার পরিচালিত জাতীয় খনি বিষয়ক কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

খনি নিষ্ক্রিয়করণ আরও দুটি সংস্থার সাবেক কর্মীরাও গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, গৃহযুদ্ধের পর শ্রীলঙ্কায় তারাও ক্লাস্টার বোমা পেয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংস্থা দুটির কর্মকর্তারা জানান, পুথুকুদিউরিপ্পু ও সুথানথিরাপুরাম শহরের সরকার ঘোষিত নো ফায়ার জোন এর নিকটে পাওয়া ক্লাস্টার বোমাগুলো পাওয়া যায়। ২০০৯ সালে সংঘর্ষে চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলে এ এলাকায় কয়েক হাজার বেসামরিক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।

গার্ডিয়ানকে এক বিবৃতিতে হালো জানিয়েছে, তারা জানে না কোন পক্ষ এবং কখন এসব অস্ত্র মজুত করেছে। তবে গত তিন দশকের মধ্যেই এগুলো মজুত করা হয়ে থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার সরকার ও এলটিটিই বিদ্রোহীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের অবস্থান হয় ২০০৯ সালে। জাতিসংঘের হিসেবে, শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এএ/