চীনা বিনিয়োগে বন্দর নির্মাণের প্রতিবাদে শ্রীলংকায় বিক্ষোভে সংঘর্ষ

চীনা বিনিয়োগে বন্দর ও শিল্প এলাকা নির্মাণের প্রতিবাদে শ্রীলংকায় বিক্ষোভশ্রীলংকার দক্ষিণাঞ্চলে চীনের বিনিয়োগে একটি বন্দর ও শিল্প এলাকা নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ফলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর একটি অনুষ্ঠান দেরিতে শুরু করতে হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, শনিবার প্রধানমন্ত্রী রানির উইকরেমেসিঙ্গে বন্দর নগরী হাম্বানটোটাতে একটি শিল্প এলাকা উদ্বোধন করতে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।সরকার সমর্থকরা প্রথমে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করে। হামলার পর বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুড়ে জবাব দেয়।

সংঘর্ষে ঠিক কতজন আহত হয়েছেন তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে অ্যাম্বুলেন্সে করে অনেক আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভের এক আয়োজন সংসদ সদস্য ডিভি চানাকা জানান, বন্দরের যে সাধারণ মানুষের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমিগুলোর মালিকানা তুলে দেওয়া হচ্ছে চীনের হাতের। তাদের আশঙ্কা এই বন্দর ও শিল্প নগরী ‘চীনা কলোনি’-তে পরিণত হবে।

বন্দর ও শিল্প নগরী নির্মাণের জন্য কয়েক হাজার গ্রামবাসীকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। সরকার বন্দর এলাকাকে ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাজে লিজ দিতে যাচ্ছে। যাতে চীনের মালিকানা থাকবে ৮০ শতাংশ। বন্দর এলাকার পাশেই একটি শিল্প নগরী নির্মাণ করা হবে। যাতে চীনা কোম্পানিকে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হবে।

সরকারের দাবি, যাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে তাদের নতুন জমি প্রদান করা হবে।

চীনে বড় ধরনের বিনিয়োগের ধারাবাহিকতায় বন্দর নির্মাণ সর্বশেষ প্রকল্প। ২০০৯ সালে ২৬ বছরের দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার শ্রীলংকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা শুরু করে চীন।

দক্ষিণ এশিয়ায় নিজের প্রভাব ও উপস্থিতি বাড়াতে চীনের তথাকথিত স্ট্রিং অব পার্ল কৌশলের অংশ হিসেবেই এ বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির সাংবাদিক জিল ম্যাকগিভেরিং। তিনি আরও জানান, তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তুলতে চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প ম্যারিটাইম সিল্ক রুটের অংশ হবে শ্রীলংকার এই বন্দর। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা।

/এএ/