কোরিয়া উপদ্বীপে উত্তেজনার মধ্যেই সিউলে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট

সিউলে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সমার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো দশদিনের এশিয়া সফরে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল পৌঁছেছেন মাইক পেন্স। কোরিয়ান উপদ্বীপে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই রবিবার সিউল পৌঁছালেন পেন্স। সিউলে পা রাখার কয়েক মুহূর্ত আগে উত্তর কোরিয়ার ৬ষ্ঠ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ব্যর্থ হয়।

বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সিউল পৌঁছান মাইক পেন্স। দক্ষিণ জাতীয় সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন। এছাড়া রবিবারই তিনি মার্কিন ও দক্ষিণ কোরীয় সেনাদের সঙ্গে ইস্টার সানডের আয়োজনে উপস্থিত হন। রাতে তিনি নৈশভোজে অংশ নেবেন। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হোয়াং কিয়ো-আহন’র সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মার্কিন ও দক্ষিণ কোরীয় সেনাদের আয়োজনে ইস্টার সানডের ভাষণে পেন্স জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার অটল রয়েছে। তিনি বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমাদের সম্পর্ক যে দৃঢ় অবস্থানে আছে সেরকম কখনও ছিল না।

মাইক পেন্স কোরিয়া যুদ্ধে নিহত এক সেনার ছেলে। নিজের কার্যালয়ে বাবার রৌপ্যপদক প্রদর্শন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা অবস্থান করছে।

এদিকে, চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের অস্থিরতা নিয়ে চীনা কুটনীতিকের সঙ্গে রবিবার টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।  তবে আলোচনার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।

সিরিয়ায় বিষাক্ত সারিন গ্যাস হামলার পর পরই উত্তর কোরিয়ার একটি উপদ্বীপের দিকে নৌবহর পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকেও পাল্টা হুমকি দিতে ছাড়েননি উ. কোরীয় প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। পিয়ংইয়ং অভিযোগ করে বলেছে, এ পদক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোরিয়া উপদ্বীপকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে।

সম্প্রতি ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সিরিয়া সরকারের ওপর তিনি এরই মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছেন। আফগানিস্তানেও আইএস জঙ্গিদের ওপর অপারমাণবিক সবচেয়ে বড় বোমা বিস্ফোরণ এরই মধ্যে ঘটিয়েছেন তিনি। উত্তর কোরিয়াকে থামানো না গেলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পারমাণবিক অস্ত্র হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করে ফেলতে পারে বলে উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন।

গত ৫ এপ্রিল জাপান সাগরে একটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। এর আগে ৬ মার্চ উত্তর কোরিয়ার চীন সীমান্তের নিকটবর্তী তংচ্যাং-রি অঞ্চল থেকে জাপান সাগরে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। তখন দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্ভবত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। 

পারমাণবিক ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম চালানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এবং জাতিসংঘ বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ওই কার্যক্রম থেকে সরে আসেনি উত্তর কোরিয়া। সূত্র: এপি, রয়টার্স, সিনহুয়া।

/এএ/