যে কারণে গুয়াম দ্বীপে হামলা চালাতে চায় উত্তর কোরিয়া

গুয়াম দ্বীপযুক্তরাষ্ট্রের টেরিটরি অঞ্চল গুয়াম দ্বীপে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক হামলার হুমকি দিয়েছে। এরপর ছোট্ট দ্বীপটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। কেন এই দ্বীপে হামলা চালাতে চায় উত্তর কোরিয়া- প্রশ্নটির জবাব পাওয়া যায় দ্বীপটিতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির উপস্থিতিতে।
গুয়াম দ্বীপের আকার যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের মতোই। তবে এখানে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই-র ৪ হাজার মাইল পশ্চিমে এবং জাপানের ১ হাজার ৬০০ মাইল দক্ষিণে গুয়াম অবস্থিত। ফলে এটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সামরিক কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেয় ১৮৯৮ সালে। ওই সময় থেকেই ২১০ বর্গ মাইলের দ্বীপটিতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক স্থাপনা গড়ে তুলে চলেছে।

নৌ, কোস্ট গার্ড আর বিমান বাহিনীর তিনটি ঘাঁটিতেই দ্বীপের এক-তৃতীয়াংশ দখল করে আছে। এখন ৬ হাজার মার্কিন সেনা উপস্থিত থাকলেও আগামীতে তা বাড়বে। জাপানের ওকিনাওয়া ঘাঁটির ১৯ হাজার মেরিন সেনার ৪ হাজার গুয়ামে স্থানান্তরিত হবেন ২০২৮ সালের মধ্যে।

একাধিক সামরিক ঘাঁটি থাকায় গুয়ামের অর্থনীতিতে সেনাবাহিনীর অবদান অনেক বেশি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে অ্যান্ডারসন বিমান ঘাঁটি গড়ে তোলে যুক্তরাষ্ট্র। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় গুয়ামের এই বিমান ঘাঁটি আরও আধুনিক করা হয়। পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রভাব বজায় রাখার জন্য এই বিমান ঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

জুলাই মাসে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর কোরীয় উপসাগরীয় অঞ্চল দিয়ে যে দুটি মার্কিন সুপারসোনিক বোমারু বিমান উড়েছিল সেগুলো গুয়ামেই মোতায়েন করা।

সামরিক ঘাঁটি

দ্বীপটির দক্ষিণাংশে মার্কিন নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ঘাঁটি রয়েছে।

৩০০ বছরের বেশি সময় দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ ছিল স্পেনের হাতে। ১৮৯৮ সালে স্পেনিশ-আমেরিকান যুদ্ধের পর এটির নিয়ন্ত্রণ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এক বছর পর যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটি ২০ মিলিয়ন ডলারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিনে নেয়।

১৯৪১ সালের ১০ ডিসেম্বর পার্ল হারবরে হামলার তিন দিন পর জাপান দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ১৯৪৪ সালের জুলাই পর্যন্ত জাপান এটি নিয়ন্তণ করে। তিন সপ্তাহের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় জাপানের কাছ থেকে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

১৯৫০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি টেরিটরি অঞ্চলে পরিণত হয় গুয়াম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে ভোটহীন প্রতিনিধি রয়েছে অঞ্চলটির। সীমিত ক্ষমতার নিজস্ব সরকার রয়েছে, যা গভর্নর শাসিত। গুয়ামের নাগরিকরা জন্মগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। কিন্তু তাদের কোনও আয়ক দিতে হয় না এবং সাধারণ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। সূত্র: ডেইলি নিউজ।

/এএ/