রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘পাকিস্তানের মাদার তেরেসা’র দাফন

s3.reutersmedia.net‘পাকিস্তানের মাদার তেরেসা’ খ্যাত জার্মান চিকিৎসক ও নান (খ্রিস্টান ধর্মযাজক) রুথ ফাউকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। পাকিস্তানে কুষ্ঠ চিকিৎসায় জীবন নিবেদিত করেছিলেন এই জার্মান নারী। তার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শনিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়।

পাকিস্তানে পতাকায় শোভিত রুথের কফিনটি মোটরশোভাযাত্রা সহকারে মেরি অ্যাডেলেইড লেপ্রসি সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে সেন্ট প্যাট্রিক ক্যাথেড্রালে শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

সারাজীবন নিজেকে মানবসেবায় নিয়োজিত রাখা এ নারী ১০ আগস্ট করাচির একটি হাসপাতালে ৮৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

১৯২৯ সালে জার্মানির লিপজিগে জন্মগ্রহণ করেন রুথ ফাউ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে তার ঘর-বাড়ি তছনছ হয়ে যায়। মেডিসিনে পড়াশোনা করার পর ১৯৬০ সালে মানবসেবা ও ধর্ম প্রচারের জন্য জার্মানি থেকে ভারতবর্ষের উদ্দেশে রওনা করেছিলেন ফাউ। কিন্তু ভিসা-বিষয়ক জটিলতায় তাকে পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থান করতে হয়। ওই সময় করাচির একটি এলাকায় কুষ্ঠ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। রোগীদের অমানুষিক যন্ত্রণা ফাউকে ব্যথিত করে। তিনি তাদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। কুষ্ঠ রোগীদের সেবা দিতে একটি খুপড়ি ঘর তুলে সেখানে গড়ে তোলেন নিরাময় ক্লিনিক। ধীরে ধীরে তার সেবাকার্যক্রম বিস্তৃত হয়ে পাকিস্তানের সব প্রদেশেই ছড়িয়ে আছে। তার প্রচেষ্টাতেই ১৯৯৬ সালে পাকিস্তানকে কুষ্ঠমুক্ত ঘোষণা করা হয়। কুষ্ঠমুক্ত ঘোষিত এশিয়ার প্রথম দেশ পাকিস্তান।

শুধু কুষ্ঠ চিকিৎসাই নয়, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ও রুথ ফাউ ছুটে গেছেন অসহায় মানুষের পাশে। দুর্গত মানুষদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছিলেন নিজেকে। মানবসেবায় ফাউ এর এ অকৃত্রিম অবদানের জন্য অনেকেই তার নাম দিয়েছিলেন পাকিস্তানের মাদার তেরেসা। সূত্র: রয়টার্স।

/এএ/