ইন্দোনেশিয়ার আচেহতে শরিয়া আইনে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে প্রকাশ্যে

শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে ১৫ জনকে প্রকাশ্যে শরিয়া আইন মোতাবেক শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন নারী। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন শত শত মানুষ, যাদের মধ্যে ছিল শিশুরাও। প্রকাশ্যে শাস্তি প্রদান দেখার জন্য উপস্থিত জনগণ অভিযুক্তদের দুয়োধ্বনি দেয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, আচেহর রাজধানী বান্দা আচেহর বাইতুররাহিম মসজিদের সামনে শাস্তি কার্যকরের ওই ঘটনা ঘটে।180714132922-banda-aceh-public-flogging-1-exlarge-169

অভিযুক্তদের মধ্যে দুই জন পুরুষকে সমকামিতার অভিযোগে ৮৭ বার বেত্রাঘাত করা হয়। ৯ জনকে সর্বোচ্চ ২৬টি করে বেত্রাঘাত করা হয় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে। চারজনকে মদ খাওয়ার দায়ে ২৭টি বেত্রাঘাত করা হয়। এদের মধ্যে একজন নারী ছিলেন। অভিযুক্তদের ঐতিহ্যবাহী সাদা রঙের কোকো শার্ট পরানো হয়েছিল। তাদের শাস্তি কার্যকর করেছে মুখমণ্ডল ঢাকা একজন ব্যক্তি। বেত্রাঘাতের সংখ্যা মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে একজন ইউনিফরম পরা কর্মকর্তাকে দেখা যায় বেত্রাঘাত কার্যকরকারীকে শিখিয়ে দিতে, কোথায় কোথায় বেত মারতে হবে।

180714132924-banda-aceh-public-flogging-2-exlarge-169আচেহ প্রদেশের গভর্নর আইন জারি করেছিলেন, এরকম শারীরিক শাস্তি প্রকাশ্যে দেওয়া যাবে না; কারাগারের ভেতরে দিতে হবে। কিন্তু বান্দা আচেহর শরিয়া পুলিশের  প্রধান মোহাম্মদ হিদায়াত জানিয়েছেন, গভর্নরের আদেশে বিস্তারিতভাবে কিছু বলা না থাকায় প্রকাশ্যেই শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার বাকি অঞ্চলগুলো থেকে ভিন্ন আচেহ প্রদেশ। সেখানে শরিয়া আইন চালু রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়ার ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে শুধু আচেহ প্রদেশেই আইনগত বৈধভাবে শরিয়া শাসন রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, শরিয়া আইনের কারণে আচেহ প্রদেশে লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডারদের (এলজিবিটি) নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাদেরকে সর্বক্ষণ ভীতিকর পরিবেশের মধ্যে থাকতে হয়।