নির্বাসিত আফগান উপরাষ্ট্রপতি দোস্তাম আজ ফিরছেন

যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে গত বছর চাপের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন উপরাষ্ট্রপতি রশিদ দোস্তাম। রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রবিবার তিনি আফগানিস্তানে ফিরছেন। আফগান কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ওই ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তুরস্ক থেকে ফিরে তিনি আবার উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শুরু করবেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় দোস্তামের সমর্থনের কারণেই উজবেক বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীকে পাশে পেয়েছিলেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে কর্মকর্তাদের সূত্রে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান সমঝোতার ফলাফল হিসেবে আফগানিস্তানে আগামী অক্টোবরে সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে ফিরছেন দোস্তাম। 

আফগান উপরাষ্ট্রপতি রশিদ দোস্তাম

দোস্তাম উজবেক বংশোদ্ভূত নেতা। ২০১৬ সালে তিনি আফগানিস্তানের পশ্চিমা দাতা দেশগুলোর রোষের মুখে পড়েন। সে সময় প্রতিদ্বন্দ্বী একজন রাজনৈতিক নেতা আহমাদ এশচি অভিযোগ করেছিলেন, দোস্তামের দেহরক্ষী তাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। এশচি তার অভিযোগে যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।  অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও আন্তর্জাতিক চাপে গত বছরের মে মাসে আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হন দোস্তাম। চিকিৎসার কারণ দেখিয়ে তিনি তুরস্কে চলে গিয়েছিলেন।

আফগান সরকারের মুখপাত্র হারুন চাকানসুরি জানিয়েছেন, চার্টার্ড বিমানে রবিবার আফগানিস্তানে ফেরার পর উপরাষ্ট্রপতি রশিদ দোস্তামকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানানো হবে। তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর বিষয়ে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। দোস্তামের এই দেশে ফেরার ঘটনার কিছু দিন আগেই তার অনুগত আধাসামরিক বাহিনীর একজন কমান্ডারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর ওই কমান্ডারের মুক্তির দাবিতে উত্তর আফগানিস্তানে সহিংস প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে দোস্তামের সমর্থকরা। চাকানসুরি জানিয়েছেন, দোস্তামের ফেরার ব্যবস্থা হলেও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহিংস বিবাদে জড়িয়ে পড়া দোস্তাম সমর্থিত কমান্ডার নাজিমুদ্দিন কায়সারিকে কারাগারেই থাকতে হবে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত যেমন চলবে, তেমন চলবে তার অভিযুক্ত সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান।

যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে ‘খাঁটি যুদ্ধবাজ’ দোস্তামের বিরুদ্ধে নানান ধারার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি তালেবান যোদ্ধাদের কন্টেইনারের মধ্যে আটকে রেখে মারতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে সমর্থন করে উজবেক জনগোষ্ঠীর সমর্থন নিশ্চিত করেন। রয়টার্স লিখেছে, এবারও তিনি নির্বাসন থেকে ফিরছেন ঠিক নির্বাচনের আগে। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। চলতি বছর অক্টোবরে আফগানিস্তানের সংসদীয় নির্বাচন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০১৯ সালে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সমঝোতার অংশ হিসেবেই তাকে দেশে ফেরানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।