দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ৩০ কোটি ডলারের নতুন মার্কিন বরাদ্দ

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় চীনের অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকা প্রভাব মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ৩০ কোটি ডলারের নতুন নিরাপত্তা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও শনিবার এই অর্থ বরাদ্দের তথ্য জানিয়ে বলেছেন, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য মিয়ানমারের রাখাইনে চলতে থাকা সংকটের সমাধান হওয়া দরকার। বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে যোগ দিয়েছেন পম্পেও। ওই অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।s4.reutersmedia.net (2)

‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয়’ এলাকায় নিরাপত্তা নির্বিঘ্ন করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষ্ঠার কথা জানিয়েছেন মাইক পম্পেও, ‘আমরা এ ঘোষণা দিতে গর্ববোধ করছি, এ অঞ্চলের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্পর্ক শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ৩০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে।’ নতুন এই বরাদ্দের মাধ্যমে সমুদ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত, মানবিক সহায়তা প্রদান, শান্তিরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং ‘আন্তর্জাতিক হুমকি’ মোকাবেলার ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

এ সপ্তাহে আরও একটি বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রযুক্তি, জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতে ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এই আর্থিক বরাদ্দ ‘অঞ্চলটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সহযোগিতামূলক সম্পর্কের এক নব সূচনার জন্য করা বিনিয়োগ।’

যুক্তরাষ্ট্র যখন ‘মুক্ত ও স্বাধীন ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের’ স্বপ্ন দেখছে তখন চীন তার বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের জন্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে রেষারেষি হতে থাকলে তার প্রভাব দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতেও পড়বে।  ওই অঞ্চলের দক্ষিণ চীন সাগরকে নিজের দাবি করছে চীন। কিন্তু আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোর কয়েকটি তাদের অধিকারের বিষয়ে অনড়।  সমস্যার সমাধানে বৃহস্পতিবার চীন ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী বিরোধপূর্ণ সাগরে চলাচলের ক্ষেত্রে কি কি রীতি মেনে চলতে হবে তা নির্ধারণ করা হবে। তবে সমালোচকরা মনে করেন, এই চুক্তি চীনের সময়ক্ষেপণের কৌশল মাত্র। চীন এই সময়ের মধ্যে নিজের অবস্থান আরও সংহত করতে চায়।

সম্প্রতি জাপান , অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের’ বদলে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল’ ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল’ বলতে চীনকেন্দ্রিক এলাকা বোঝানো হয়। আর ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল’ বলতে গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত ওই এলাকার দেশগুলোকে বোঝানো হয়।

পম্পেও আশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিকায়নের বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে চলতে থাকা মানবিক সংকটের সমাধান করাটাও একটি মুক্ত ও স্বাধীন ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য দরকারি।