পাকিস্তানকে ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ পাইয়ে দিতে সৌদি আরবের উদ্যোগ

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ‘ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ (আইডিবি) পাকিস্তানকে ৪০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। পাকিস্তান সেন্ট্রাল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বিবেচনার পেছনে সৌদি আরবের উদ্যোগ কাজ করছে। দেশটি বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে পাকিস্তানকে বের করে আনতে ভূমিকা রাখতে চায়। পাকিস্তান বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে প্রবল সংকটে ভুগছে। বাজেট ঘাটতিও রয়েছে বিপুল পরিমাণ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিনানশিয়াল টাইমসের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ইমারন খানের সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করলে আইডিবি ঋণের প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করবে।ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকএ সপ্তাহেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সম্ভাব্য অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মাত্র এক হাজার কোটি ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। স্বল্পমেয়াদী ঘাটতি রয়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলারের। আমাদের নেট রিজার্ভ কার্যত শূন্য।’ পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তান ইতোমধ্যেই ‘ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ডের’ (আইএমএফ) কাছ থেকে এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের ঋণের জন্য আবেদন করেছে।

ডন লিখেছে, এ ঋণ দেওয়ার বদলে আইএমএফ পাকিস্তানের কাছে চীনের সঙ্গে হওয়া চুক্তির বিস্তারিত জানতে চাইতে পারে। পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ওয়াকার মাসুদ মন্তব্য করেছেন, ‘গত অর্থ বছরে বাজেট ঘাটতি ছিল জিডিপির সাত শতাংশ। এটাকে চার শতাংশে নামিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সহজ কোনও কাজ নয়।’

জেদ্দাভিত্তিক আইডিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা পাকিস্তানকে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থেকে উদ্ধারের জন্য ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। ইমরান খান আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলে তারা ঋণের প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠাবেন। ইমরান খানের অর্থমন্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হতে থাকা আসাদ উমর ঋণের প্রস্তাবটি গ্রহণ করবেন বলে তাদের বিশ্বাস।

ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আইডিবি প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এখন মূলত ইমরানের নেতৃত্বে নতুন সরকারের আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার অপেক্ষা। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ডনকে বলেছেন, পাকিস্তানকে এই ঋণ দেওয়ার পেছেনে সৌদি আরবের উদ্যোগ রয়েছে। কারণ দেশটি পাকিস্তানকে এই দুরবস্থা থেকে উদ্ধারে ভূমিকা রাখতে চায়।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, পাকিস্তান যতই ঋণ নিক না কেন, দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে ইমরান খানের সরকারকে ব্যয় সংকোচন ও কর বৃদ্ধির মতো অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিয়তে হবে।

পাকিস্তান বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে তার সমাধান হবে না আইডিবির দেওয়া ঋণে। কারণ চলতি অর্থ বছরে দেশটির বাজেট ঘাটতি দুই হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এ বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে আইডিবির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আইডিবির ঋণে পাকিস্তানের সমস্যা সমাধানে কিছুটা হলেও অবদান রাখা সম্ভব হবে।’