এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না: তাইওয়ান প্রশ্নে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কোনও প্রচেষ্টাকে সুযোগ না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংগি। তার ভাষ্য, এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেওয়া হবে না। বরং ‘যেকোনও মূল্যে’ তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসেবে রাখা হবে। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) তার দেওয়া এই বক্তব্য প্রসঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্স উল্লেখ করেছে, রুশ যুদ্ধবিমান কেনার দায়ে চীনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি ও শুল্ক-পাল্টা শুল্ক আরোপের সূত্রে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ানোর পাশাপাশি চীনকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সুসম্পর্ক, যার সূত্রে গত সোমবার আবারও তাইওয়ান প্রণালিতে গেছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ।s4.reutersmedia.net

চীন দাবি করে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে থাকা তাইওয়ান তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাইওয়ানকে নিজের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনে দেশটির একটি প্রদেশে পরিণত করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কথা কোনও দিনও বলেনি চীন। তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রত্যাহারে বিভিন্ন দেশের প্রতি কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রেখেছে দেশটি। যারা তাইওয়ানের বদলে চীনের প্রতি কূটনৈতিক আনুগত্য ঘোষণার দাবি উপেক্ষা করেছে এমন দেশ মাত্র ১৭টি।

বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংগি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হওয়া সাংরি লা ডায়লগ সিকিউরিটি ফোরামের মতো চীনের উদ্যোগে গঠিত বেইজিংভিত্তিক জিয়াংশান ফোরামের উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তিনি বলেছেন, ‘তাইওয়ানের বিষয়টি চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার সঙ্গে সম্পর্কিত। চীনের সবচেয়ে গুরুতর স্বার্থগত বিষয়গুলোর একটি এটি। এ বিষয়ে বারবার চীনের ধৈর্যচ্যুতি ঘটানোর চেষ্টা করাটা বিপজ্জনক। কেউ যদি তাইওয়ানকে চীনের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় তাহলে চীনের সেনাবাহিনী যেকোনও মূল্যে তার জবাব দেবে।’

তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক স্পর্শকাতর। কিন্তু চীন তার জমির এক ইঞ্চিও ছেড়ে দেবে না। ‘এই অঞ্চলের বাইরের দেশগুলোর’ পক্ষ থেকে দক্ষিণ চীন সাগরে যে ‘উস্কানিমূলক’ তৎপরতা চালানো হয়েছে, তার জবাবে চীন পাল্টা শক্তি প্রদর্শন করা থেকে বিরত থেকেছে। অথচ ওই দেশগুলো ‘ফ্রিডম অব নেভিগেশনকে’ অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছিল।

এদিকে তাইওয়ানে স্বাধীনতার দাবি জোরালো হচ্ছে। গত শনিবার (২০ অক্টোবর) তাইওয়ানে স্বাধীনতার জন্য গণভোট দাবি করে সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছিল। আর কর্মসূচি পালনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনের দল ‘ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির’ (ডিপিপি) কার্যালয়কে। সাই ইং ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বেইজিং সন্দেহ করে, সাই তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা করবেন।

স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট হবে কিনা তা এখনও নির্ধারিত না হলেও কোন নামে ভবিষ্যৎ অলিম্পিক গেমসে তারা অংশ নেবে সে বিষয়ে একটি গণভোট আয়োজনের অনুমতি ইতোমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে তাইওয়ান সরকার। ‘চাইনিজ তাইপের’ বদলে ‘তাইওয়ান’ নামে তারা পরিচিত হবে কিনা তা নিয়ে আয়োজিত গণভোটে ভোট দেবেন তাইওয়ানিজরা। স্বাভাবিকভাবেই এতে ভ্রু কুঞ্চিত হয়েছে চীনের।