মিয়ানমারে ১৪ মাসে ৬৬৯ শিশু নিহত: জাতিসংঘ

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ১৪ মাসে মিয়ানমারে ৬৬৯ শিশু নিহত ও ৩৯ জন বিকলাঙ্গ হয়েছে। এদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা শিশু। জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

03b88a4547704f1ea3a3bc4c7452b4bd_18
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানি দুজারিক প্রতিবেদনটির তথ্য তুলে ধরেছেন। এতে দেখা যায়, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সামরিক অভিযান জোরদারের পর হতে মিয়ানমারের শিশুরা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে গত ১৪ মাসের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে স্টেফানি জানান, অবশ্যই তাদেরকে যথাসম্ভব মানবিক সহযোগিতা দিয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, আমি মনেকরি বাংলাদেশিরা ১০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই এটা বড় পদক্ষেপ।
রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমার পাঠানো উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন স্টেফানি।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করবে জাতিসংঘ। এজন্য শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের তৃতীয় কমিটি একটি নিরপেক্ষ মেকানিজম প্রতিষ্ঠার দ্রুত তাগিদ দিয়ে প্রস্তাব পাস করেছে ।
রেজ্যুলেশনে বলা হয়েছে, রাখাইনে মুসলিমরা মিয়ানমারের স্বাধীনতার পূর্বেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বসবাস করছে। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন পুনর্বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়ে মিয়ানমার সরকারকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর যারা অত্যাচার করেছে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য।
বর্তমান রেজ্যুলেশনে মিয়ানমারে মানবাধিকার লংঘন তদন্তের জন্য দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষ মেকানিজম প্রতিষ্ঠার ওপরে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের মিলিটারির ওপরে যেন বেসামরিক সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
রাখাইনে সামরিক অভিযানের কারণে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লংঘন করা হচ্ছে এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানানো হয়, এই অভিযান বন্ধের এবং এর জন্য যারা দোষী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য।
আরও বলা হয়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরত যেতে পারে এবং রাখাইনে যেন জাতিসংঘসহ অন্যান্য সাহায্য সংস্থা কাজ করতে পারে।
উল্লেখ্য, বছরের পর বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের নৃশংসতার কারণে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সর্বশেষ গত বছর ২৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর নৃশংসতার পর কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।