আরসার হুমকির কারণে রোহিঙ্গারা ফিরছে না: মিয়ানমারের মন্ত্রীর দাবি

মিয়ানমারের ‘সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার, রিলিফ অ্যান্ড রিসেটেলমেন্ট’ মন্ত্রী ইউ উইন মিয়া আয়ে দাবি করেছেন, আরসার সহযোগীরা বাংলাদেশ ছেড়ে মিয়ানমারে না যেতে রোহিঙ্গাদের হুমকি দিয়েছে। আর সে কারণেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে চাইছে না। এই মন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে থাকা এমন রোহিঙ্গারা ভাইবার ব্যবহার করে মিয়ানমার সরকারকে জানিয়েছে, তাদেরকে প্রত্যাবাসনের ফরম ফিলাপ করতে দেওয়া হচ্ছে না! সংবাদমাধ্যম ইরাবতী লিখেছে, মন্ত্রী ইউ উইন মিয়া আয়ে একই সঙ্গে দেশটির রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান।1200px-Win_Myat_Aye

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেছেন, ‘আশ্রয় শিবির থেকে যারা মিয়ানমারে ফিরে আসতে চায় তাদের কয়েকজনকে নির্যাতন করা হয়েছে, এমন কি হত্যাও করা হয়েছে।’ আর এই রকম ভীতিকর পরিস্থিতির কারণেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতেপারছে না।

গত অক্টোবরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল। মিয়ানমার প্রতিদিন ১৫০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। এজন্য তারা মংডুতে একটি অভ্যর্থনা শিবির খুলেছিল। গত বৃহস্পতিবার থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনও রোহিঙ্গা ফিরে যাওয়ার জন্য উপস্থিত হয়নি।

ইরাবতী জানিয়েছে মন্ত্রী ইউ উইন মিয়া আয়ের সঙ্গে মন্ত্রী ইউ সোয়ে অং, বহির্গমন বিষয়ক মন্ত্রী ইউ থেইন সিউ এবং রাখাইন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ইউ নেই পু অভ্যর্থনা কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানানোর জন্য। সেখানে কোনও রোহিঙ্গা উপস্থিত না হলেও ইউ উইন মিয়া আয়ে বলেছেন, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গারা গেলেই তাদেরকে গ্রহণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে গেলে টেকনাফে অবস্থিত আশ্রয় শিবিরে বিক্ষোভ দেখা দেয়। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দাবি করে।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সন্ত্রাসীদের দমন করার নামে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় সামরিক অভিযান শুরু করেছিল মিয়ানমার। সেই অভিযানে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও পুড়িয়ে মারার মতো ঘটনা ঘটানো শুরু করলে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নির্মূলের প্রচেষ্টা’ আখ্যা দিয়েছে। গত আগস্ট থেকে বাংলাদেশে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।