এফ-১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে সীমান্তে সতর্কাবস্থায় পাকিস্তান

বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে ভারতীয় বিমান হামলার দুই সপ্তাহ পরও সীমান্তে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পূর্ণ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। তাদের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রন্টে মোতায়েন করা হয়েছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের পুরো একটা স্কোয়াড্রন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।

1072830403

 

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ভারতীয় বিমানবাহিনী মার্কিন স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে দেখেছে সীমান্তে পাকিস্তান পূর্ণ সক্রিয় রয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনী বালাকোটের বিমান হামলায় জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার কথা মার্কিন স্যাটেলাইট ছবির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের শীর্ষ প্রতিরক্ষা ও সরকারি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের মতে, ভারতের সঙ্গে সীমান্তে আকাশসীমায় বিমান চলাচলে পাকিস্তানের নিষেধাজ্ঞা এখনও কার্যকর রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখায় রাওয়ালপিন্ডি সদর দফতর থেকে ১০ কর্পস ও সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের একটি ব্রিগেড মোতায়েন করেছে পাকিস্তান।
২০১৬ সালে পাকিস্তানের উরিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা তুলে ধরে এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের কাছ থেকে পাওয়া নিশ্চিত খবরে আমরা জানতে পেরেছি পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে, হায়দরাবাদ থেকে স্কার্ডু পর্যন্ত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রাডার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন করেছে ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার পরপরই। তারা সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো পাল্টা পদক্ষেপ আশা করছিল।
ওই ভারতীয় কর্মকর্তার মতে, ২৬ ফেব্রুয়ারি হামলার পর পাকিস্তানের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ছিল ওই দিনই গোলাবর্ষণ করা। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সুন্দরবানি, নৌশেরা, পুঁচ, বিম্বারগলি ও কৃষ্ণঘাঁটি সেক্টরে ভারী মর্টার ও ১২০ এমএম আর্টিলারি কামান ব্যবহার করেছে।
নিজেদের সংগৃহীত তথ্যের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান ১৯ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপের দিন ১৬ বার এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২৬ বার লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া গত দুই মাসে পাকিস্তান ৪৬৭ বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।
সাউথ ব্লকের কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক ভারতের মহাপরিচালকের ফোন তোলেননি। ভারতীয় হামলার পরদিনও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ফোন ধরা হয়নি।
ভারতীয় কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের সামরিক উপস্থিতির বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি। তবে তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে কোনও সুযোগ দেওয়া হবে না। ভারত যে কোনও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার জেরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে কাশ্মিরের পাকিস্তান অংশে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। পরদিন দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে ভারতীয় এক পাইলটকে আটক করে পাকিস্তান। দুই দিন পর অভিনন্দন বর্তমান নামের ওই ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান। এরপর দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কিছুটা থিতু হয়ে আসে।