আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন: প্রত্যক্ষদর্শী উসমান আলি

ইস্টার সানডেতে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলে সিরিজ আটটি বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ২০৭ জনে। আহত হয়েছেন আরও কয়েক শ’ মানুষ। এই হামলাটি দেশটির দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ অবসানের পর সবচেয়ে বড় হামলা। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আটটি হামলা চালিয়েছে একজন আত্মঘাতী হামলাকারী। দেশটির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজয়বর্ধনে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অন্তত সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রক্ত দিতে আগ্রহীদের দীর্ঘ সারি

রোমান ক্যাথলিক গির্জার কাছেই উসমান আলির বাসা। তিনি যখন দেখতে পান, গির্জা থেকে ‘জোর’ করে উপাসকদের বের করে দেওয়া হচ্ছে দেখেই তার মনে হয়েছিল কিছু একটা ঘটেছে।

উসমান আলির বাসার সামনে যে সড়ক রয়েছে তা শহরের প্রধান হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েছে। তিনি হঠাৎ শুনতে পান অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ। তখন তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হ্যাশট্যাগ দেখে জানতে পারেন কী ঘটেছে।

সিরিজ হামলার ভয়াবহতা ও নৃশংসতার ভিডিও এবং ছবির পাশাপাশি দেশটির রক্তদান কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপড়ে পড়া ভিড়ের কথা উঠে আসছে। হামলায় আহতদের জন্য রক্ত দিতে এসব কেন্দ্রগুলোতে জড়ো হয়েছেন মানুষ। উসমান আলিও রক্ত দিতে চলে যান ন্যাশনাল ব্লাড সেন্টারে। সেখানে গিয়ে দেখতে পান মানুষের ভিড়।

উসমান আলি বলেন, সেখানে উপচে পড়া ভিড়। মানুষ যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করায় সড়কেও জট লেগেছে এবং সবাই রক্তদান কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইছিল। রক্তদান কেন্দ্রে শুধু রক্তদাতাদের নাম, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের নম্বর লিখে রাখা হচ্ছে। সবাইকে বলে দেওয়া হচ্ছে চলে যেতে, কেন্দ্র থেকে যোগাযোগ করা হলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

তবে মানুষেরা সেই অনুরোধে খুব বেশি সাড়া দিচ্ছেন না। তারা রক্তদান কেন্দ্রের আশেপাশেই ঘুরাঘুরি বা অবস্থান করছেন। উসমান আলি জানান, রক্তদান কেন্দ্রে অনেক লম্বা লাইন। সেখানে প্রবেশের পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চোখে পড়ে। তিনি বলেন, সবার একটাই উদ্দেশ্য। বিস্ফোরণে আহতদের সহযোগিতা করা। তারা কোন ধর্মের বা জাতের তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না। একেকজন অন্যজনের ফরম পূরণে সহযোগিতা করছেন।

উসমান আলি বলেন, আমি ভেবে পাচ্ছি না, কারা এই হামলা চালালো। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।


 

আরও পড়ুন-