হংকংয়ে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ

হংকংয়ে গত সপ্তাহের বিক্ষোভে মুখোশধারীর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত কর্মসূচিতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করছে সেখানকার পুলিশ। শনিবার কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইউয়েন লং শহরের মিছিল করে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

_108085847_mediaitem108085844

সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত রবিবার দেশটির নিউ টেরিটরির ইউয়েন লং স্টেশনের পাশে আন্দোলন করছিল একদল বিক্ষোভকারী। এ সময় মুখোশধারী একদল যুবক আনদোলনকারীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় অন্তত ৪৫ জন আহত হয়। এরপর থেকে হামলাকারীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করছিল আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, স্থানীয় ‘ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা' তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। এ হামলার জন্য তারা পুলিশকে দায়ী করে। আন্দোলনকারীরা জানায়, হামলা থেকে বাঁচাতে পুলিশ সেসময় কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তবে পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় তারা বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।

শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ। সাধারণত অঞ্চলটিতে এমন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। পুলিশ বলছে, স্থানীয় বাসিন্দা ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংসতার আশঙ্কায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ইউয়েন লং শহরের প্রধান সড়কে শনিবার কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মিছিল শুরু করে। মিছিলের শুরুতে পুলিশ পর্যবেক্ষণ ও ভিডিও ধারণ করছিল। দাঙ্গা পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছিল।

পুলিশ দাবি করছে, কয়েকজন বিক্ষোভকারীর হাতে লোহার রড ছিল। কয়েকজন সড়কের বেস্টনি তুলে ফেলে। আরও কয়েকজন একটি পুলিশের গাড়ি ঘিরে রাখে ও ভাঙচুর চালায়। এতে করে পুলিশ সদস্যদের জীবন হুমকিতে পড়ে।

স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ছুড়তে শুরু করে। মুখোশ পরিহিত বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে। তবে তারা অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াতে কোনও বিঘ্ন সৃষ্টি করেনি।

গত ৯ জুন থেকে চীনবিরোধী এ আন্দোলনের সূত্রপাত মূলত কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল নিয়ে। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, এই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে বিলটি থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম। প্রথমে বিলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দিলেও পরে আন্দোলনের তীব্রতায় এটি ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন তিনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে ক্ষমা চান হংকংয়ের বাসিন্দাদের কাছে। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকেরা। 

এক সময়কার ব্রিটিশ কলোনি হংকং এখন চীনের অংশ। যদিও ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং। দেশটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন।