রাখাইনে ফের ‘ক্লিয়ারেন্স অভিযানের’ পরিকল্পনা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অভিযানের পরিকল্পনার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক করার পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। রাখাইনের এক আইনপ্রণেতা ও একটি ত্রাণ গোষ্ঠী এই তথ্য জানিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।

BB1642wL
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গ্রাম প্রধানদের প্রতি সতর্কতা জানিয়ে চিঠিটি লেখা হয়েছে বুধবার। চিঠিটি রয়টার্সের হাতে এসেছে এবং এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাজ্য সরকারের মন্ত্রী কর্নেল মিন থান। এতে স্বাক্ষর রয়েছে রাথেডাউং নগর কর্তৃপক্ষের প্রশাসক আং মুইন্ট থিনের। চিঠিতে গ্রাম প্রধানদের বলা হয়েছে কিয়াউকটান ও আশেপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব এলাকায় সন্দেহভাজন বিদ্রোহীরা অবস্থান করছে।
চিঠিতে স্পষ্ট জানা যায়নি কার পক্ষ থেকে এই নির্দেশ এসেছে। কিন্তু রাজ্যে সীমান্ত বিষয়ক ও নিরাপত্তা মন্ত্রী রয়টার্সকে বলেছেন, সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এই নির্দেশনা এসেছে। মিয়ানমারে যে তিনটি মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এটি তার একটি।
প্রশাসকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এই গ্রামগুলোতে ক্লিয়ারেন্স অভিযান পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী। এই অভিযানের সময় সংঘর্ষ যদি আরাকান আর্মির সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হয় তাহলে গ্রামে অবস্থান করবেন না, সাময়িক গ্রাম ছেড়ে যান।
তবে সরকারের মুখপাত্র শনিবার শেষ রাতের দিকে জানান, সীমান্ত-বিষয়ক কর্মকর্তাদের এই উচ্ছেদের নোটিশ বাতিল করা হয়েছে। সীমান্ত কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে নির্দেশ দেওয়ার বিষয়ে। কিন্তু তারা দাবি করেছে, এতে খুব কম গ্রাম প্রভাবিত হয়েছে। অভিযানের বিষয়ে প্রশাসকের মন্তব্য সংগ্রহ করতে পারেনি রয়টার্স।

c1_1942304
মিন থান বলেছেন, চিঠিতে উল্লেখ করা ‘ক্লিয়ারেন্স অভিযান’ হলো ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান। তিনি জানান, প্রশাসক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ঠিকমতো বুজতে পারেননি। অভিযান অল্প কয়েকটি গ্রামে পরিচালিত হবে। চিঠিতে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে তেমন না।
চিঠির অন্যান্য বিষয় নিশ্চিত করে ফোনে মিন থান জানান, অভিযানের প্রস্তুতি নিতে এক সপ্তাহের মতো লাগতে পারে। যারা গ্রামে থেকে যাবে তারা আরাকান আর্মির প্রতি অনুগত।
শনিবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাও হতায় ফেসবুকে এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার সেনাবাহিনী নির্দেশ দিয়েছে ক্লিয়ারেন্স অভিযান শব্দবন্ধ ব্যবহার না করার জন্য। তিনি আরও জানান, গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রাখাইনে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর। বৌদ্ধ রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর এই বিদ্রোহীরা রাখাইনের পশ্চিমাঞ্চলে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দাবি করছে। এলাকাটি আরাকান বলে পরিচিত।