ভারত থেকে ৩০ লাখ ডোজ টিকা কিনছে সৌদি আরব

ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ৩০ লাখ ডোজ এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রহণ করবে সৌদি আরব। সোমবার সেরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

খবরে বলা হয়েছে, সৌদি আরব প্রতি ডোজ টিকা ৫.২৫ ডলারে কিনছে সেরামের কাছ থেকে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার হয়ে সেরাম এই টিকা বিক্রি করছে।

সৌদি আরবের কাছে বিক্রি করলেও ইউরোপে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন রফতানির আপাতত কোনও পরিকল্পনা নেই সেরামে। যদিও বেলজিয়ামে উৎপাদন ঘাটতির কারণে ইইউতে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে চাপে রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট। দরিদ্র দেশগুলোতে ১০০ কোটি টিকা সরবরাহের জন্য গেটস ফাউন্ডেশন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও গ্যাভি ভ্যাকসিনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সেরাম। ভারতীয় এই সংস্থা ব্রিটিশ-সুইডিশ প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে টিকা সরবরাহ করবে। এছাড়া নিজস্ব চুক্তিতেও টিকা সরবরাহের অধিকার রয়েছে তাদের।

সেরাম প্রধান আদর পুনাওয়ালা রয়টার্সকে বলেন, যেখানে সমর্থন দরকার সেখানে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে আমরা সমর্থন দিচ্ছি। আমরা এটি করতে পেরে খুশি।

তবে ইউরোপে এখনই টিকা সরবরাহের পরিকল্পনা নেই জানিয়ে আদর পুনাওয়ালা বলেন, আমাদেরকে এখনই ইউরোপে টিকা সরবরাহ করতে বলা হয়নি। এটি করলে আফ্রিকা ও ভারতের সরবরাহে ক্ষতি হবে। আমরা অবশ্যই তা চাই না। তবে আমরা সন্তুষ্ট যে একসময় ধনী দেশগুলোর দিকেও আমরা তাকাতে পারি। ছয় মাস থেকে এক বছরে এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।

পুনাওয়ালা আরও জানান, সৌদি আরবের জন্য নির্ধারিত ডোজগুলো এক সপ্তাহ বা দশ দিনের মধ্যে পাঠানো হবে। এই একই দামে (৫.২৫ ডলার) ১৫ লাখ টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায়ও সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, টিকা সরবরাহের সময়ের মধ্যেই আমরা আমাদের উৎপাদন পরিপূর্ণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কয়েকটি দেশে আমরা টিকা সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছি।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, মহামারির সময়ে তারা টিকা থেকে লাভ করবে না। এর আগে ডোজপ্রতি ৫ ডলার করে ২০ লাখ ডোজ টিকা ব্রাজিলকে সরবরাহ করেছে সেরাম।

পুনাওয়ালা বলেন, মার্চ থেকেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার উৎপাদন ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দেবে সেরাম। বর্তমানে দিনে ২৪ লাখ ডোজ টিকা উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি।

সেরাম ইন্সটিটিউট মার্কিন সংস্থা নোভোভ্যাক্সের টিকার মজুদ করার পরিকল্পনা করছে। সম্প্রতি ভারতের পুনেতে এই সংস্থার একটি নির্মাণাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এতে টিকা উৎপাদনের কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

পুনাওয়ালা বলেন, ফাইজারের মতো সংস্থাগুলো সঙ্গে অংশীদার হওয়ার ইচ্ছা নেই সিরামের। কারণ তাদের টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। ভারতে এই ধরনের সুবিধা নেই। মার্কিন কোম্পানি জানিয়েছে, ভারত সরকার টিকা কেনার প্রতিশ্রুতি দিলে তারা অনুমোদনের জন্য আবেদন চালিয়ে যাবে।

গত বছর ডিসেম্বরের শুরুতে প্রথম টিকা উৎপাদনকারী হিসবে ভারতে জরুরি অনুমোদনের আবেদন করেছিল ফাইজার। কিন্তু ভারতে তা এখনও অনুমোদন পায়নি। দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, ফাইজার কর্মকর্তারা তাদের ডাকে সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদিও কোম্পানির দাবি, তারা নোটিশ পায়নি।