মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি নিরাপত্তা বাহিনীর

মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাজপথে নামা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাচিনে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। তবে এতে কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ-জমায়েত ঠেকাতে দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শহরের রাস্তায় টহল দিচ্ছে সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া যান। সেনা অভ্যুত্থানের পর সাঁজোয়া যান রাস্তায় নামানোর ঘটনা এটাই প্রথম। অভ্যুত্থানবিরোধীদের ধরপাকড়ের প্রস্তুতি হিসেবেই এ টহল বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

বিক্ষোভকারী ও বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও যুক্তরাজ্য।

মিয়ানমারে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সতর্ক বার্তা দিয়েছে সেখানকার মার্কিন দূতাবাস। তাদেরকে নিজ নিজ বাসস্থানে নিরাপদে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সেনা টহল জোরদারের খবরে রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এমন আহ্বান জানানো হয়।

গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। রাজপথে নেমে আসছে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ দমনে পুলিশও কঠোর হয়ে উঠতে শুরু করেছে। সেনা অভ্যুত্থানের দিনেই নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি-সহ উর্ধ্বতন নেতাদের গ্রেফতারের পর বহু বিক্ষোভকারীকেও আটক করা হচ্ছে। তবে তাতেও দমানো যাচ্ছে না বিক্ষোভ।

অব্যাহত বিক্ষোভ ঠেকাতে একটি আইনে সংশোধনী আনে জান্তা সরকার। এর আওতায় এখন থেকে কারও বাড়িতে রাত্রিকালীন কোনও অতিথি অবস্থান করলে তা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সেনাবাহিনী পরিচালিত ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান সহজ করতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজনদের আটক ও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চালানোর আগে আদালতের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রেখে যেসব আইন চালু ছিল, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স।