সেনাবিরোধী বক্তব্যের পর মিয়ানমারের জাতিসংঘ দূত বরখাস্ত

জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূতকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা চেয়ে জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার পর শনিবার তাকে বরখাস্ত করলো দেশটির সামরিক সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

শুক্রবার রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন দেশটির জনগণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদানে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া মিয়ানমার প্রশ্ন জাতিসংঘের এক বিশেষ বৈঠকে সব সদস্য রাষ্ট্রকে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতিতে দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া সামরিক সরকারকে কোনও ধরনের সহযোগিতা না করারও আহ্বান জানান মিয়ানমারের দূত।

গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে প্রতিবাদ-সমাবেশ-বিক্ষোভ চলছে। ওই দিনই অং সান সুচি'র নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তাকে গৃহবন্দী করা হয়। গত তিন সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে প্রতিদিনই সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-ধর্মঘট চলছে। ইতোমধ্যে বিক্ষোভকারীদের ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দমন-পীড়ন ছাড়াও হামলা চালিয়েছে সেনা অভ্যুত্থান সমর্থকেরাও।

শুক্রবার নির্বাচিত নেতা অং সান সু চির সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে জাতিসংঘের বিশেষ বৈঠকে মিয়ানমারের দূত সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় যে কোনও ব্যবস্থা নিন এবং মিয়ানমারের জনগণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা প্রদান করুন’। সাধারণ পরিষদের ওই বৈঠকে কিয়াও মোয়ে তুন বলেন, ‘অবিলম্বে সেনা অভ্যুত্থান থামাতে, নিরীহ মানুষের ওপর নীপিড়ন থামাতে, জনগণের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ফেরাতে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্ভাব্য সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন’।

সামরিক সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করতে গিয়ে তিনি তিন আঙুলের ইঙ্গিতও প্রদর্শন করেন। যাত মিয়ানমারে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে প্রতিবাদকারীরা ব্যবহার করছেন।

শনিবার কিয়াও মোয়ে তুনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। বরখাস্তের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তিনি দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং একটি অস্বীকৃত সংস্থার হয়ে কথা বলেছেন যা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না।

তার বিরুদ্ধে দূত হিসেবে ক্ষমতা ও দায়িত্বে অপব্যবহারেরও অভিযোগ এনেছে জান্তা সরকার।