মিয়ানমারে আটকে পড়া বিক্ষোভকারীদের মুক্তির আহ্বান জাতিসংঘের

মিয়ানমারের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে আটকে পড়া প্রায় দুইশ’ অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীকে নিরাপদে মুক্তি দিতে জান্তা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত সোমবার থেকে ইয়াঙ্গুনের একটি এলাকায় এসব বিক্ষোভকারীকে ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, আটকে পড়া ব্যক্তিরা শান্তিপূর্ণভাবে  বিক্ষোভ করেছে আর তাদের নিরাপদে চলে যেতে দিতে হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ আরও জোরালো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। সেনাশাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে গত সোমবার ধর্মঘটের ডাক দেয় দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ট্রেড ইউনিয়নগুলো। ধর্মঘটের ফলে বন্ধ থাকে বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের দোকানপাট, কলকারখানা। নির্মাণ, কৃষি ও পণ্য উৎপাদনসহ অন্তত নয়টি খাতের ট্রেড ইউনিয়ন সোমবারের ধর্মঘটে অংশ নেয়। এছাড়া আইন প্রয়োগের অজুহাতে হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়েও মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তা বাহিনী।

জাতিসংঘ বলছে, ইয়াঙ্গুনের সানচং এলাকার ফোর-স্ট্রিট থেকে বিক্ষোভকারীদের বের হতে দিচ্ছে না নিরাপত্তা বাহিনী। ওই এলাকার বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে সেখানকার বাসিন্দা নয় এমন ব্যক্তিদের খুঁজছে পুলিশ। এই অভিযানে অন্তত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

এছাড়া ওই এলাকা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন। সহিংসতা এবং গ্রেফতার ছাড়াই তাদের নিরাপদে বের হয়ে যেতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তার মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক। তিনি বলেন, ‘আটকে পড়া অনেকেই নারী, তারা আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করতে শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেয়।’ যুক্তরাজ্য দূতাবাসও বিক্ষোভকারীদের মুক্তি দাবি করেছে।

ইয়াঙ্গুনে বিপুল সংখ্যক মানুষ কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় সমবেত হয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে। যাতে করে আটকে পড়া বিক্ষোভকারীরা নিরাপদে বের হয়ে যেতে পারে। তবে তাদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে নিরাপত্তা বাহিনী।