মিয়ানমারে ১৯ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড

সামরিক বাহিনীর এক সহযোগীকে হত্যার অভিযোগ এনে মিয়ানমারের ১৯ জন অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন মিয়াওয়াড্ডি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে ইয়াঙ্গুনের একটি জেলায় ওই সহযোগীকে খুন করা হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন থেকে প্রতিদিনই মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন।এসব বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত ৬৫০ জন নিহত হয়েছে।

টানা বিক্ষোভের মধ্যে ২৭ মার্চ ইয়াঙ্গুনের উত্তর ওক্কালাপা জেলায় সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনকে মারধর এবং তার এক সহযোগীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের দায়ী করে সেনা সরকার। ঘটনার পরই ওই জেলায় সামরিক আইন জারি করে সামরিক আদালত পরিচালনার পথ উন্মুক্ত করা হয়। শুক্রবার সেই আদালতেই ১৯ বেসামরিক বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৭ জনকেই তাদের অনুপস্থিতিতে দণ্ড দেওয়া হয়। অভ্যুত্থানের পর এটাই প্রথম কোনও প্রকাশ্য দণ্ড ঘোষণা করলো সেনা সরকার।

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করা সেনাবাহিনীর দাবি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রশমিত হয়ে আসছে। শুক্রবার সেনা সরকারের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে মানুষ শান্তি চায় বলেই বিক্ষোভ কমে আসছে। এছাড়া আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে সেনা সরকারের এই দাবির দিনেই অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গড়ে তোলা ব্যারিকেড অপসারণ করতে গিয়ে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শহর বাগোতে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রাচীন এই শহরটির প্যাগোডা ও স্কুলের খেলার মাঠে মরদেহ স্তুপ করে রেখেছে জান্তা সরকারের বাহিনী। মার্কিন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়ার (আরএফএ) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুক্রবার মিয়ানমারের বাগো শহরে গুলিবৃষ্টি চালিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।