তালেবানের আফগানিস্তান দখলে মুসলিম বিশ্বে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

তালেবানের আফগানিস্তান দখল ও কাবুলে চলমান ক্ষমতার লড়াই বিভিন্ন দেশ নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করছে। চীন ও রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ তালেবানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে। কয়েকটি দেশ নীরব রয়েছে এবং অনেক দেশ অপেক্ষায় আছে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার।

কাবুলে চলমান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ইসলামি দেশগুলোও। এই মাসের শুরুতে এক বিবৃতিতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ (ওআইসি) আফগানিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধি ও বেসামরিকদের প্রাণহানিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তবে গোষ্ঠীটি কাবুল দখল করার পর ওআইসির একটি বৈঠক আজ রবিবার (২২ আগস্ট) সৌদি আরবের জেদ্দাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

তালেবানের আফগানিস্তান দখলে কয়েকটি মুসলিম দেশের প্রতিক্রিয়া:

পাকিস্তান

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি শনিবার রাশিয়া, জার্মানি, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম এবং ওআইসি প্রধানের সঙ্গে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। তালেবান নেতাদের সঙ্গে আইএসআই প্রধান হামিদ ফয়েজের বৈঠকের কথা জানিয়েছে সিএনএন-নিউজ ১৮। সংবাদমাধ্যমটির হাতে আসা কিছু ছবিতে আফগানিস্তানের কান্দাহারে তালেবানের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা গেছে তাকে। ফলে কাবুলে নতুন সরকার গঠনে পাকিস্তান বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কাতার

আফগানিস্তানে চলমান সংকটে পশ্চিম এশিয়ার ছোট্ট দেশ কাতারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয় কাতারের রাজধানী দোহাতে অবস্থিত। ২০১৮ সাল থেকে তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছে দেশটি। কাতার তালেবানকে একটি ঘাঁটি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদেরকে রাজনৈতিক ও সামরিক আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। গত বছর দোহাতে তালেবানের সঙ্গে চুক্তির পরই কেবল যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়।

ইরান

আফগানিস্তানে তালেবানের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতার কারণে শিয়া অধ্যুষিত প্রতিবেশী ইরান উদ্বিগ্ন। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তালেবানের কাছে কাবুল ও হেরাতে দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছে তেহরান। জুলাই মাসে তালেবানের একটি প্রতিনিধি দল তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে।

তুর্কমেনিস্তান

দেশটি তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তালেবান তাদের সীমান্তের ওপারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরই আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। 

সৌদি আরব

তালেবানরা কাবুল দখল করার এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানের মানুষের জীবন, সম্পদ এবং নিরাপত্তা দিতে ইসলামিক বিধান অনুসরণ করতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই আফগান জনগণের ইচ্ছার পাশে থাকবে রিয়াদ। এতে বলা হয়, ‘সৌদি আরব আশা করে, ইসলামের মহান আদর্শের ভিত্তিতে... তালেবান আন্দোলন এবং সব আফগান পক্ষ নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, জীবন ও সম্পদ রক্ষায় কাজ করবে।’

তুরস্ক

আফগানিস্তানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তুরস্ক। তবে তুরস্কের এই প্রস্তাবে খুশি নয় তালেবান। কাবুল বিমানবন্দরে তুর্কি সেনা না পাঠানোর জন্য হুমকিও দিয়েছে তারা। পাকিস্তান ও পাকিস্তান তালেবানের সঙ্গে তুর্কি সরকারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ফলে আফগানিস্তানে তুরস্কের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।