তালেবানের সঙ্গে সীমিত পরিসরে সম্পর্ক রাখার ঘোষণা ভারতের

তালেবানের সঙ্গে সীমিত পরিসরে সম্পর্ক রাখার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এ ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে ভারতের জোরালো কোনও আলোচনা হয়নি। আর আলোচনার দরজা খুললেও দলটির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি নেবে দিল্লি। তবে আফগানিস্তানের নতুন শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘সীমিত সম্পর্ক’ বজায় রাখা হবে।

তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন শুক্রবার বলেছিলেন, ‘মুসলমান হিসেবে আমাদের কাশ্মিরের মুসলিমদের পক্ষে আওয়াজ তোলার অধিকার রয়েছে।’ চীনকে পাকিস্তানের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তিনি। তার ওই বক্তব্যের পরই শ্রিংলার এমন মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

কাতারের রাজধানী দোহায় ভারতীয় দূতাবাসে মঙ্গলবার তালেবান নেতা শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই-এর সঙ্গে বৈঠক করেন কাতারে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তাল। ওই বৈঠকে আফগানিস্তানে আটকে থাকা ভারতীয়দের পাশাপাশি ভারতে আসতে ইচ্ছুক আফগান সংখ্যালঘুদের দিল্লিতে ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের আবেদন বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন তালেবান নেতা।

দোহার ওই বৈঠক ভারতের এতো দিনের কাবুল নীতি থেকে অনেকটাই আলাদা বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। সাবেক মনমোহন সিংহ বা অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার কখনও তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার দরজা খোলেনি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কার্যত বাধ্য হয়েই মোদি সরকারকে দলটির সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে হয়েছে। কারণ, আফগানিস্তানের সঙ্গে কাশ্মিরের সমস্যা এবং ভারতের নিরাপত্তা সরাসরি যুক্ত। কাবুলে তালেবান শাসনে পাকিস্তানের প্রভাব স্বভাবতই দিল্লির জন্য অস্বস্তিকর হবে।

মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে অবশ্য বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘কেন্দ্র আগে স্পষ্ট করুক, এখনও তারা তালেবানকে জঙ্গিগোষ্ঠী মনে করে কি না।’ এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের মন্তব্য দিল্লির সতর্ক পদক্ষেপের ইঙ্গিত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। সূত্র: আনন্দবাজার।