‘যুগান্তকারী’ পরীক্ষা বদলাতে পারে ক্যানসার চিকিৎসা

সোমবার যুক্তরাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা এনএইচএস-এর তরফে শুরু হচ্ছে একটি নতুন ধরনের ক্যানসার শনাক্তকরণ পরীক্ষা। কোনও ব্যক্তির শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাওয়ার আগেই মোট ৫০ ধরনের ক্যানসারের উপস্থিতি ধরে ফেলতে পারবে এই নতুন পরীক্ষা। এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গালেরি নামের এই বিশেষ টেস্টে রক্ত থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এটি যাচাই করে দেখে যে, ডিএনএ-র কোনও অংশ ক্যানসারের কোষ থেকে এসেছে কি না।

এই পরীক্ষার প্রাথমিক ট্রায়ালে দেশজুড়ে ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষাগার ও অন্যান্য পরীক্ষাগারে সংগ্রহ করা হবে রক্তের নমুনা। এনএইচএস এর লক্ষ্য, দেশটির মোট আটটি অঞ্চল থেকে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার নমুনা সংগ্রহ করা।

এক বিবৃতিতে এনএইচএস-এর প্রধান নির্বাহী আমান্ডা প্রিচার্ড বলেন, এই সহজ ও দ্রুত রক্তের পরীক্ষাটি ক্যানসার শনাক্তকরণ ও তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে এখানে ও সারা বিশ্বে বিপ্লব ঘটাতে পারে।

মার্কিন জৈব প্রযুক্তি সংস্থা গ্রেইল ইনকর্পোরেটেড এই পরীক্ষাটির উদ্ভাবন ও ট্রায়ালের জন্য এনএইচএস-এর সঙ্গে গত নভেম্বর মাসে চুক্তিবদ্ধ হয়।

রোগের একেবারে প্রাথমিক ধাপে ধড়া পড়লে একজন রোগীর চিকিৎসার দিক নির্ধারণ অনেকটাই সহজ হয়ে পড়ে। এনএইচএস বলছে, স্টেজ ওয়ান বা প্রথম ধাপে ধরা পড়লে রোগীর প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা একজন স্টেজ ফোর বা চতুর্থ ধাপের ক্যানসার রোগীর তুলনায় পাঁচ থেকে ১০ গুণ বেশি থাকে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেন, ‘দ্রুত শনাক্তকরণ প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম। এই পরীক্ষায় আমরা ক্যানসার শরীরে ছড়ানোর আগেই ধরে ফেলতে পারবো। এই রোগকে হারাতে এটাই আমাদের সামনে সবচেয়ে ভালো সুযোগ।'

ট্রায়ালের প্রধান অনুসন্ধানকারী গবেষক ও কিংস কলেজ লন্ডনের ক্যানসার বিষয়ক প্রফেসর পিটার সাসিয়েনির মতে, গালেরি পরীক্ষা ‘প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্তের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী।'

রক্তের নানা ধরনের পরীক্ষা ছাড়াও, শরীরে ক্যানসার শনাক্ত করতে গবেষক ও চিকিৎসকরা এর আগে অন্যান্য ধরনের আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। যেমন নিশ্বাসের পরীক্ষা করা ব্রিদালাইজার পরীক্ষা।

বিশেষজ্ঞরা বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক গবেষণা যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে ব্যাপকভাবে লাভবান হবে ক্যানসার শনাক্তকরণের পদ্ধতি। সূত্র: ডিডাব্লিউ।