আফগানিস্তান নিয়ে আইএমএফ-এর হুঁশিয়ারি

আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক বিপর্যয় শরণার্থী সংকট তৈরি করতে পারে  বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে এই সংকট  প্রতিবেশি দেশগুলোর পাশাপাশি তুরস্ক ও ইউরোপে প্রভাব ফেলতে পারে।

আইএমএফ বলছে, আফগানিস্তানের অর্থনীতি এই বছর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে। যাতে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে পড়বে আর মানবিক সংকটের কারণ হবে। আইএমএফ বলছে আফগানিস্তানের প্রতিবেশিরা আরও আক্রান্ত হতে পারে কারণ তারা আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করে।

আফগান প্রতিবেশি তাজিকিস্তান ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তারা আর কোনও শরণার্থীর বোঝা নিতে পারবে না। বিদেশে সম্পদ জব্দ হওয়া এবং মানবিকতা সংক্রান্ত নয় এমন বেশিরভাগ ত্রাণ স্থগিত হয়ে পড়ায় আফগানিস্তানে নগদ অর্থের প্রবাহ ফুরিয়ে আসছে।

আঞ্চলিক অর্থনৈতিক আউটলুকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেছে, ‘বড় ধরণের শরণার্থী ঢল আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সরকারি সম্পদের ওপর চাপ ফেলতে পারে, শ্রম বাজারে চাপ তৈরি করতে পারে এবং সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এসবই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে।’

আফগানিস্তান থেকে কত মানুষ শরণার্থী হতে পারে তা স্পষ্ট না হলেও আইএমএফ এর ধারণা এই সংখ্যা দশ লাখের বেশি হতে পারে। আর তাদের আশ্রয় দিতে তাজিকিস্তানের ১০ কোটি, ইরানের ৩০ কোটি এবং পাকিস্তানের ৫০ কোটি ডলার খরচ হতে পারে।

গত মাসে তাজিকিস্তান জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা না পেলে তারা আর বেশি সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয় দিতে পারবে না। এছাড়া মধ্য এশিয়ার অন্য দেশগুলোও জানিয়েছে, শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। আফগানিস্তান বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হওয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিবেশি দেশগুলোও।

বিপুল পরিমাণ বিদেশি ত্রাণ পেয়ে অভ্যস্ত আফগানিস্তান। ব্রিটিশ সরকারের এক হিসেব অনুযায়ী ২০০১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানকে ছয় হাজার পাঁচশ’ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে বিভিন্ন দেশ। এই অর্থের বড় অংশই প্রতিবেশি ইরান, পাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানে বাণিজ্যে ব্যয় হয়েছে।