প্রেসিডেন্ট হতে চান লঙ্কান বিরোধী দলীয় নেতা

গোটাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দলের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি একথা জানিয়েছেন। তার দল সামাজি জন বালাবেগায়ার (এসজিবি) পক্ষ থেকে মিত্রদের সমর্থন আদায় নিয়ে যখন আলোচনা চলছে তখন তিনি এই ইচ্ছার কথা জানালেন।

শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে হাজারো মানুষ মার্চ মাস থেকে রাজপথে বিক্ষোভ করছেন। দেশটিতে নগদ অর্থ ফুরিয়ে গেছে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুদ আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।

প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি এই সপ্তাহে পদত্যাগ করবেন এবং পার্লামেন্টের স্পিকার আইনপ্রণেতাদের বলেছেন ২০ জুলাই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য।

বিবিসিকে প্রেমাদাসা বলেছেন, তার দল ও মিত্ররা একমত হয়েছে যে যদি শূন্যতা দেখা দেয় তাহলে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে।

২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রেমাদাসা হেরেছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট হতে হলে তাকে ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের সমর্থন পেতে হবে। রাজাপাকসে ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে গণরোষের ওপর ভরসা রাখছেন তিনি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাজপাকসে পরিবার শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে আধিপত্য বজায় রেখেছে।

জুন মাসে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি ৫৫ শতাংশতে পৌঁছেছে এবং লাখো মানুষ খেয়ে-পরে বাঁচতে সংকটে রয়েছে।

প্রেমাদাসা বলেছেন, তিনি সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।

সাজিথ প্রেমাদাসা

এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সমালোচনা রয়েছে এসজিবি নেতাকে নিয়ে। তার প্রতিদ্বন্দ্বি রনিল বিক্রমাসিংহে তখন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন। রনিল বিক্রমাসিংহেও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ঐক্য সরকার গঠনের পথ উন্মুক্ত করতে তিনিও পদত্যাগ করবেন।

শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘দ্বিধা, অনিশ্চিয়তা ও সর্বাত্মক নৈরাজ্য’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন প্রেমাদাসা। বলছেন, দেশটির প্রয়োজন ‘ঐকমত্য, পরামর্শ, সমঝোতা এবং ঐক্যবদ্ধতা’।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, শ্রীলঙ্কার বিদেশি মুদ্রার রিজাভ নেমে এসেছে ২৫ কোটিতে।

জ্বালানির ভয়াবহ ঘাটতির ফলে গণপরিবহনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। পর্যাপ্ত জ্বালানি না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। এতে বিদ্যুৎ বিহীন থাকতে হচ্ছে মানুষদের। জ্বালানি সংকটে এই সপ্তাহে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক মানুষ দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন।

প্রেমাদাসা স্বীকার করছেন, এই সংকটের দ্রুত কোনও সমাধান নেই। তার মতে, ২০১৯ সালের আগের অবস্থায় অর্থনীতিকে নিয়ে আসতে চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে।

তিনি বলেন, আমরা জনগণকে প্রতারিত করব না। আমরা অকপট হব এবং শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুর্দশা লাঘবের একটি পরিকল্পনা তুলে ধরব।

তবে কলম্বোর গল ফেস-এর বিক্ষোভকারীরা বলছেন পার্লামেন্টের ২২৫ জন সদস্য বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তারা চান রাজনীতিতে নতুন ও উদ্যমীয় মানুষদের নিয়ে নতুন সূচনা।