চীনের সাহায্য চাইলো শ্রীলঙ্কা

বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পর্যটন খাতে চীনের সাহায্য চেয়েছে শ্রীলঙ্কা। সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেইজিংয়ে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত পলিথা কহোনা এ তথ্য জানিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

পলিথা কহোনা জানান, অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বেরিয়ে আসতে চীনের সঙ্গে চার বিলিয়ন ডলারের একটি জরুরি প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা চলছে।

শ্রীলঙ্কার বৃহৎ বৈদেশিক ঋণদাতা দেশগুলোর একটি চীন। কলম্বোর বৈদেশিক ঋণের প্রায় ১০ শতাংশ আসে বেইজিংয়ের কাছ থেকে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্যও বেইজিংয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে লঙ্কান কর্তৃপক্ষ।

বেইজিংয়ে লঙ্কান দূতাবাসে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পলিথা কহোনা বলেন, কলম্বোর প্রত্যাশা চীন যেন তার দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শ্রীলঙ্কা থেকে ব্ল্যাক টি, নীলকান্তমণি, মশলা ও পোশাকের মতো সামগ্রী কিনতে উৎসাহিত করে। একইসঙ্গে আমদানির নিয়মগুলো যেন আরও স্বচ্ছ ও সহজ করা হয়।

তিনি বলেন, কলম্বো এবং হাম্বানটোটায় চীন সমর্থিত বিশাল বন্দর প্রকল্পে আরও বিনিয়োগের মাধ্যমে বেইজিং সাহায্য করতে পারে। ইতোপূর্বে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বড় চীনা বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।

চীনা পর্যটকদের প্রতিও আগ্রহ রয়েছে শ্রীলঙ্কার। ২০১৮ সালে দেশটিতে চীনা পর্যটকের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার। তবে ২০১৯ সালের আত্মঘাতী হামলা এবং কোভিড মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর এ সংখ্যা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। এখন করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় চীনা থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক আকর্ষণ করতে চায় কলম্বো।

পলিথা কহোনা জানান, শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য চীন সফরের পরিকল্পনা করছেন।

বিক্রমাসিংহে চীনের কাছে অপরিচিত নন। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেইজিং সফর করেন তিনি। ওই সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার করমর্দনের একটি ছবি এখনও বেইজিংয়ের লঙ্কান দূতাবাসে ঝুলতে দেখা যায়।

পলিথা কহোনা বলেন, তিনি চীনের প্রতি নতুন সরকারের নীতিতে কোনও মৌলিক পরিবর্তন আশা করেন না। তবে তিনি এটা বুঝতে পারছেন যে, চীনের পক্ষে এখন শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন। কেননা আরও অনেক দেশ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। ফলে একটি বৃহৎ বৈশ্বিক ঋণদাতা হিসেবে এককভাবে কলম্বোর প্রতি মনোযোগী হওয়া তাদের জন্য সহজ নয়। এই সংকট যদি শুধু শ্রীলঙ্কার হতো, তাহলে হয়তো সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হতো।