করোনা সংক্রমণের মধ্যে ‘জ্বরে আক্রান্ত’ হয়েছিলেন কিম জং উন

করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার বোন। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ার নেতার করোনা আক্রান্ত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেলো।

উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে দায়ী করেন কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো-জং। তিনি দাবি করেন, করোনাভাইরাস থাকা লিফলেট সীমান্ত পার করে পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে সিউল।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উত্তর কোরিয়ার বিজয় ঘোষণা করেছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। এরপরই এনিয়ে কথা বলেন তার বোন কিম ইয়ো জং।

গোপনীয়তা বজায় রেখে চলা উত্তর কোরিয়া গত মে মাসে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই দেশটি জ্বর সংক্রমণ ও মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ শুরু করে। তবে তাদের প্রকাশিত তথ্য নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে। এর অন্যতম কারণ কম মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাধর সিনিয়র কর্মকর্তা কিম ইয়ো জং তার ভাষণে অভিযোগ করেন দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্ত পার করে পিয়ংইয়ং বিরোধী লিফলেট পাঠিয়ে উত্তর কোরিয়ায় করোনা ছড়িয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাক্টিভিস্টরা গত কয়েক দশক ধরে এভাবে লিফলেট পাঠিয়ে আসছেন। সাধারণত বেলুন ভর্তি করে নানা ধরনের প্রচারণা চালাতে এসব লিফলেট পাঠানো হয়। তবে গত বছর এই ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।

লিফলেট পাঠানোকে কিম ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং ‘দূষিত বস্তুর সঙ্গে  মাধ্যমে একটি সংক্রামক রোগ ছড়ানোর বিপদের’ কথা উল্লেখ করেন তিনি। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘জোরালো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে উত্তর কোরিয়া।

নিজের ভাইয়ের স্বাস্থ্য নিয়েও কথা বলেন কিম ইয়ো জং। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড জ্বরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তিনি মহামারিবিরোধী যুদ্ধের মুখে শেষ অবধি যাদের যত্ন নিতে হয়েছিল তাদের কথা ভেবে এক মুহুর্তের জন্য শুয়ে থাকতে পারেননি’।

পরীক্ষা সরঞ্জামের অপ্রতুলতার কারণে উত্তর কোরিয়া সন্দেহভাজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জ্বরে আক্রান্ত বলে উল্লেখ করে থাকে। করোনাবিরোধী লড়াই অবসানের ঘোষণা দিয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন ভাইরাসে মাত্র ৭৪ জনের মৃত্যু হওয়া অলৌকিক ঘটনা।

গত ২৯ জুলাইয়ের পর উত্তর কোরিয়ার নতুন কোনও সন্দেহভাজন রোগী পাওয়া যায়নি। তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন দেশটি পরীক্ষা সীমিত করে ফেলেছে।

উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, এপ্রিলের শেষ দিক থেকে দেশটির ৪৮ লাখ মানুষ আক্রান্ত হলেও মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৭৪ জনের। ফলে মৃত্যুর হার দাঁড়ায় মাত্র ০.০০২ শতাংশ, যা পৃথিবীর মধ্যে সর্বনিম্ন।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন এই পরিসংখ্যান বিশ্বাস করা কঠিন। তারা বলছেন, পৃথিবীর অন্যতম বাজে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেশটিতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র, করোনা চিকিৎসার ওষুধ কিংবা টিকার মারাত্মক সংকট রয়েছে।

সূত্র: বিবিসি