তোশাখানা মামলা

ইমরান আদালতে আত্মসমর্পণ করলে গ্রেফতারচেষ্টা বন্ধ হবে: বিচারক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যদি আদালতে আত্মসমর্পন করেন, তবে তাকে গ্রেফতার করা থেকে ইসলামাবাদ পুলিশকে বাধা দেবেন বলে জানিয়েছেন  ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (এডিএসজে) বিচারক জাফর ইকবাল।

তোশাখানা উপহারের বিবরণ গোপন করায় ইমরানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার জন্য পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) রেফারেন্সের শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারক এ মন্তব্য করেন। 

দায়রা আদালতে ২৮ ফেব্রুয়ারি ইমরানকে অভিযুক্ত করার কথা থাকলেও, তার আইনজীবী বিচারককে শুনানি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ইমরান খানকে আরও কয়েকটি আদালতে হাজির হতে হচ্ছে। এ ছাড়া আগেও একাধিকবার ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

বিচারক পরে ইমরানের জন্য জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশকে নির্দেশ দেয়, আগামী ৭ মার্চের মধ্যে ইমরানকে আদালতে হাজির করতে। 

পিটিআই প্রধান গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন। পরে ওয়ারেন্ট বাতিলের জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) যান তার আইনজীবী।

পরে বিচারক ১৩ মার্চ ইমরানকে দায়রা আদালতে হাজির হতে বলেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবারও শুনানি এড়িয়ে যান। 

ফলস্বরূপ, এডিএসজে ইকবাল সোমবার ইমরানের জন্য অ-জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা পুনরায় জারি করেন এবং পুলিশকে ১৮ মার্চের মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।

 

 

পুলিশ যখন মঙ্গলবার ইমরানকে গ্রেফতার করতে লাহোরে জামান পার্কের বাসভবনে পৌঁছায়, তখন তারা প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। দুই দিন পিটিআই সমর্থক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। আদালতের হস্তক্ষেপে বুধবার শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষ শেষ হয়। 

একই দিন পিটিআইও ইমরানের জন্য জারি করা সর্বশেষ গ্রেফতারি পরোয়ানাকে আইএইচসিতে চ্যালেঞ্জ করে, তবে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। বলা হয়, পিটিআই প্রধানকে ট্রায়াল কোর্টে একটি  অঙ্গীকার জমা হবে, যেখানে লেখা থাকবেন ১৮ মার্চ শুনানিতে অংশ নেবেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে এডিএসজে ইকবালের আদালতে পুনরায় মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় ইমরানের পক্ষে তার আইনজীবী খাজা হারিস আহমেদ ও বাবর আওয়ান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

 

তোশাখানা মামলা

গত বছর ক্ষমতাসীন জোটের আইনপ্রণেতারা বলেছিলেন, ইমরান খান তোশাখানা থেকে (প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন) যে উপহারগুলো রেখেছিলেন, তা বিক্রি থেকে আয় যা করেন, তার বিবরণ তিনি কাউকে জানাননি। সে বছরের ২১ অক্টোবর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) জানায়, ইমরান খান সত্যিই উপহার সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি এবং ভুল তথ্য দিয়েছিলেন।

তোশাখানা হলো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন একটি বিভাগ, যা অন্যান্য সরকার প্রধান এবং বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শাসক ও সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া উপহার সংরক্ষণ করে। তোশাখানার নিয়ম অনুসারে, উপহার ভেদে একটা নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে প্রাপ্ত উপহার নিজের কাছে রাখা যায়। 

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানায়, ইমরান সংবিধানের ৬৩(১)(পি) অনুচ্ছেদে অযোগ্য হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে ইমরান যে উপহারগুলো পেয়েছিলেন, সে সম্পর্কে কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করেন ইমরান। এই অপরাধে ফৌজদারি আইনের অধীনে ইমরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরবর্তীতে রেফারেন্সের একটি অনুলিপি নিয়ে ইসলামাবাদের দায়রা আদালতের যায় ইসিপি। সূত্র: দ্য ডন