ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার ফলে পাকিস্তানের ওপর বড় কোনও আর্থিক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব। সোমবার (১২ মে) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পাকিস্তানের বর্তমান রাজস্ব ব্যবস্থার মধ্যেই এটি সামাল দেওয়া সম্ভব, নতুন কোনও অর্থনৈতিক মূল্যায়নের প্রয়োজন নেই। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা খুব দ্রুতই অগ্রসর হবে এবং পাকিস্তান আরও উচ্চমানের তুলা ও সয়াবিন আমদানি করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতায় মূল ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও পাকিস্তান অন্যান্য সম্পদ যেমন: হাইড্রোকার্বন (জ্বালানিসম্পদ) আমদানির দিকেও নজর দিচ্ছে।
অনলাইনে নেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সংঘাতকে ‘স্বল্পমেয়াদি উত্তেজনা’ বলে উল্লেখ করেন।
আগামী বাজেটে সম্ভাব্য সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আওরঙ্গজেব কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। বলেন, এখনই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা সময়োপযোগী নয়। তবে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণের জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, তা করা হবে।’
ভারতের একতরফা স্থগিত ঘোষণার পর সিন্ধু পানিচুক্তি প্রসঙ্গে আওরঙ্গজেব বলেন, চুক্তিটি পুনরায় কার্যকর হবে এবং আগের অবস্থানে ফিরে যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।
তিনি বলেন, ভারতের পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক কোনও প্রভাব পড়বে না এবং পাকিস্তান এমন কোনও পরিস্থিতার কথা ‘ভেবেও দেখতে চায় না’ যেখানে এই চুক্তি পুনর্বহালের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। ‘যুদ্ধ বন্ধে দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বিস্তৃতির প্রস্তাব একটি বড় কারণ ছিল।’
পাকিস্তান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ওপর প্রায় ২৯ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি। কারণ দেশটির মার্কিন বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। তবে এ শুল্ক বর্তমানে এপ্রিল মাসে ঘোষিত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) শুক্রবার পাকিস্তানের জন্য ৭ বিলিয়ন ডলারের এক চুক্তির অংশ হিসেবে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় অনুমোদন দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব বলেন, ইসলামাবাদ মঙ্গলবার এই অর্থের কিস্তি পাবে।
এছাড়া আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড জলবায়ু সহনশীলতা তহবিলের আওতায় পাকিস্তানের জন্য অতিরিক্ত ১.৪ বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণও অনুমোদন করেছে।
আগামী জুলাই থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবছরের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে এবং আইএমএফ-এর সঙ্গে বাজেট সংক্রান্ত আলোচনা ১৪ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী।