‘মিয়ানমার সংকট নিরসনে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন’

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংকটের তৃতীয় বছরে গড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি সমাধানে সবপক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন মনে করেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। ক্লিন ইমেজের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত জোকো উইদোদো মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বলেছেন, তবে সমস্যা নিরসনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়াচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো।

২০২১ সালে গণতান্ত্রিক পন্থি প্রধানমন্ত্রী অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। সেই থেকে দেশটির ক্ষমতায় তারা। দুর্নীতি, সহিংসতা উসকে দেওয়া, গত নির্বাচনে ভোট কারচুপিসহ ১৯টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে সু চি’র বিরুদ্ধে। কয়েকটির রায়ে দোষী সাব্যস্ত শান্তিতে নোবেল জয়ী এই নেত্রী। রোহিঙ্গা ইস্যু ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চরম অস্থিরতায় দেশটি।

এমন বাস্তবতায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট (আসিয়ান)-এর এক অনুষ্ঠানে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা জানি মিয়ানমারের পরিস্থিতি খুবই চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে সবপক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছাটা জরুরি। তাহলেই পরিস্থিতি সমাধানে আনা সম্ভব।

জোটের ১০ দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সংকটের একটি সমাধানের উপায় খুঁজতে সবাইকে কাজ করতে হবে।

ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমারকে নিয়ে গঠিত আসিয়ান জোট। আসিয়ানের সদর দফর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, একটি বড় জাহাজ তলিয়ে যেতে পারে না, কারণ লাখ লাখ মানুষকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্বে পড়ে।

এ বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আসিয়ান সম্মেলন। যেখানে সভাপতিত্ব করবে ইন্দোনেশিয়া। মিয়ানমারের জান্তাকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। ২০২১ সালে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় বিভক্ত হয়ে পড়ে আসিয়ানের দেশগুলো।

সু চি ক্ষমতা থাকাকালে রাখাইনে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়ন, হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয় সামরিক বাহিনী। সেনাবাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে প্রায় ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা কয়েক ধাপে বাংলাদেশের কক্সবাজার, উখিয়াসহ কয়েকটি জায়গায় আশ্রয় নেয়। বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে দেশটির সামরিক বাহিনীকে বার বার অনুরোধ জানালে সাড়া দেয়নি তারা। এ নিয়ে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে সেনাবাহিনীর পক্ষেই কথা বলেন সু চি।  

সূত্র: দ্য ইরাবতী