নাগার্নো-কারাবাখ সংকট: আজারবাইজানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নালিশ আর্মেনিয়ার

প্রতিবেশী আজারবাইজানের বিরুদ্ধে তাদের বিতর্কিত অঞ্চলে খাদ্য সরবরাহ বন্ধের অভিযোগ তুলে জাতিংঘের নিরাপত্তার পরিষদের কাছে নালিশ জানালো আর্মেনিয়া। দেশটির অভিযোগ, নাগার্নো-কারাবাখে জরুরি খাদ্য সরবরাহে বাধা দিচ্ছে দেশটি। ফলে মানবিক পরিস্থিতি গুরুতর আকার নিয়েছে।

জাতিসংঘে আর্মেনিয়ার বিশেষ প্রতিনিধি মেহের মার্গারিয়ান এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘গত ১৫ জুন থেকে লাচিন করিডোর পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে আজারবাইজান। যেটি দিয়ে আর্মেনিয়া ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবরুদ্ধ করায় খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, নাগার্নো-কারাবাখে প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রতিনিয়ত ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দিচ্ছে বাকু। এ অবস্থায় সেখানকার সাধারণ মানুষ ও তাদের জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

চিঠিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ কামনা করছে আর্মেনিয়া।

গত কয়েক মাস ইয়ারেভেন বাকুকে লাচিন করিডোরে যান চলাচল বন্ধ করায় অভিযুক্ত করেছে। একটি ছোট পাহাড়ি পথ যা আর্মেনিয়াকে নাগোর্নো-কারাবাখের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে যুক্ত করে।

সংখ্যাগরিষ্ঠ আর্মেনিয়ার জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির গুরুতর ঘাটতির কথা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেছেন, অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কেউ কেউ।

আন্তর্জাতিক সহায়তাকারী গোষ্ঠী ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে, নাগার্নো-কারাবাখে মানবিক পরিস্থিতি গুরুতর আকার নিয়েছে। এ ঘটনায় আজারবাইজানের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখণ্ড হলেও আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মূলত এ নিয়েই সংঘাতের সূত্রপাত। ২০১৬ সালে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে বড় ধরনের সংঘাতে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। দীর্ঘ বিবাদের জেরে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। এতে ৫  হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

সূত্র: আল জাজিরা