মিডিয়া মুঘল জিমি লাইয়ের বিচার শুরু

বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখার পর হংকংয়ের মিডিয়া মুঘল জিমি লাইয়ের বিচারকাজ শুরু হয়েছে। জিমি লাই সোমবার আদালতে হাজির হয়েছেন।  ৭৬ বছর বয়সী জিমি লাইকে যদি এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাহলে যাবজ্জীবন জেল হতে পারে তার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। 

২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন জিমি লাই। তাকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করতে এই আইন ব্যবহার করে আসছে চীন।

জিমি লাইয়ের মামলা আন্তর্জাতিক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। 

বেইজিং ব্যাপক গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় ২০২০ সালে জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু করে। অশান্তি দমন করার জন্য আইনটি প্রয়োজনীয় ছিল। ওই আইনে জিমি লাইকে একজন বিশ্বাসঘাতক দেখানো হয়। তিনি চীনের জাতীয় নিরাপত্তাকে খর্ব করতে চেয়েছিলেন। তবে সমালোচকরা বলছেন যে জিমি লাইয়ের ঘটনা হংকংয়ের উপর বেইজিংয়ের শক্ত অবস্থানের আরেকটি উদাহরণ।

জিমি লাইয়ের আইনজীবীর দল বলছেন, তাকে সুষ্ঠু শুনানির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বেইজিং তাকে যুক্তরাজ্যের একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে বাধা দেয়। এর পরে হংকংয়ের নেতা জন লি তিন বিচারককে বাছাই করেছেন। তারা জিমি লাইয়ের বিচার শুরু করেছেন।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন জিমি লাইয়ের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে রবিবার বলেছেন, আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে কেউ জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে এবং বিশেষ করে ব্রিটিশ নাগরিক।  তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের শান্তিপূর্ণ চর্চা বন্ধ করার উদ্দেশে জিমি লাইকে টার্গেট করা হয়েছে।

উল্লেখ্য জিমি লাই চীনে জন্মগ্রহণ করেন এবং শৈশবে হংকংয়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এখন যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তার ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই তার বাবার পক্ষে হস্তক্ষেপ করার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে এরইমধ্যে তদবির করছেন। তিনি এই মাসের শুরুতে ক্যামেরনের সাথে দেখাও করেছেনে।

এর আগে তিয়ানয়ানমেন হত্যাযজ্ঞের বার্ষিকী পালনে অংশ নেওয়ায় হংকংয়ের মিডিয়া মুঘল জিমি লাইকে ১৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

১৯৯৫ সালে তিনি অ্যাপল ডেইলি প্রতিষ্ঠা করেন। এটাকেই মূল হিসেবে ধরে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়।