মিয়ানমারের আরও একটি শহর দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা

মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোটের কাছে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের আরও একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। গত অক্টোবরে আক্রমণ শুরুর পর লাউকাইং শহরের নিয়ন্ত্রণ জোটের প্রধান লক্ষ্য ছিল। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে আমেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি।

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি নিয়ে গঠিত জাতিগত বিদ্রোহীদের জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে লাউকাইংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ সময় দেশটির সামরিক বাহিনী তাদের অস্ত্র জমা দেয়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে উভয় পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লাউকাইং হলো কোকাং স্বশাসিত অঞ্চলের রাজধানী। ভৌগোলিকভাবে এটি উত্তরের শান শহরের অংশ। আর এমএনডিএএ হলো কোকাং সংখ্যালঘুদের একটি সামরিক বাহিনী, যারা জাতিগত চীনা।

আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর যে পরাজয়, তার মধ্যে এই শহরের পতন সবচেয়ে বড় ঘটনা। গণতন্ত্রপন্থি গেরিলা এবং দেশজুড়ে অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াইয়ের কারণে ‘স্বৈরশাসক’ জান্তা সরকার চাপের মধ্যে রয়েছে, তা স্পষ্ট।

২০২১ সালে দেশটির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর কয়েক মাস ধরে জান্তা সরকার কঠিন সময় পার করছে। জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠী গত অক্টোবর থেকে সমন্বিতভাবে জান্তাবিরোধী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

এর মধ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট বেশ কয়েকটি সামরিক চৌকি ও উত্তরে চীনের সীমান্তবর্তী কয়েকটি শহর এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কয়েকটি শহরও দখল করে নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, স্বৈরশাসনের পরিসমাপ্তি ঘটাতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মিয়ানমারের দুই-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ডজুড়ে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ চলছে। বিদ্রোহী-জান্তার লড়াইয়ে গত কয়েক মাসে ৩৬০-এরও বেশি বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। এই সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ।