ইন্দোনেশীয় উপকূলে নৌকাডুবি: ৭০ রোহিঙ্গা নিহতের আশঙ্কা

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ৭০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার (২২ মার্চ) এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। এ ঘটনায় আরও ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর বলেছে, মৃতের এই সংখ্যাটি নিশ্চিত করা হলে চলতি বছরের সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা হবে এটি।

বুধবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি কাঠের নৌকা ডুবে যায়। তখন স্থানীয় জেলেরা ছয় জনকে উদ্ধার করে। আচেহ শহরের একটি জেলে সম্প্রদায় জানিয়েছে, জোয়ারের কারণে নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর তারা কয়েক ঘণ্টা তীরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন।

এর কয়েক ঘণ্টা পর আচেহ প্রদেশ থেকে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল রওনা দেয়। নৌকাটি উপকূলের অনেকটা দূরে চলে যাওয়ায়, সেটি শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়।

বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মিয়ানমার। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর দমন অভিযানের কারণে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের সাধারণত দক্ষিণ এশিয়া থেকে আগত বিদেশি হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাদের নাগরিকত্বকেও অস্বীকার করে।

ইউএনএইচসিআরের তথ্যে দেখা গেছে, গত বছর দুই হাজার ৩০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় এসেছেন। এই সংখ্যা আগের চার বছরের মোট সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

জানুয়ারিতে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছিল, মিয়ানমার বা বাংলাদেশ থেকে পালাতে গিয়ে ২০২৩ সালে অন্তত ৫৬৯ রোহিঙ্গা মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।

ইউএনএইচসিআরের এশিয়া মুখপাত্র বাবর বেলুচ শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন, এই সর্বশেষ নৌকাডুবির ঘটনায় ১৫১ জন রোহিঙ্গা আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ জনকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বাকিদের ‘মৃত বা নিখোঁজ’ বলে ধারণা করা হয়েছিল।

আচেহতে ইউএনএইচসিআরের সুরক্ষা সহযোগী ফয়সাল রহমান রয়টার্সকে বলেছেন, বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গারা ভালো আছেন। তাদের পশ্চিম আচেহর একটি রেডক্রস ভবনে রাখা হয়েছে।

আচেহর অভিবাসন সংস্থাকে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে কোনও সাড়া পায়নি রয়টার্স।