চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যতই পরিবর্তন হোক না কেন, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্ব আগের মতোই ঘনিষ্ঠ থাকবে। শুক্রবার (৭ মার্চ) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ১৪তম জাতীয় গণ কংগ্রেসের তৃতীয় অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, চীন-রুশ সম্পর্ক পরিপক্ক, স্থিতিশীল ও সহনশীল। এটি কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে পরিবর্তন হবে না। চীনা সংবাদমাধ্যম সিএমজি এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেন সংকট প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেন, বিভিন্ন পক্ষের উচিত এই সংকট থেকে শিক্ষা নেওয়া। তিনি বলেন, ‘একটি দেশের নিরাপত্তা অন্য দেশের অনিরাপত্তার ভিত্তিতে হবে না।’ তিনি অভিন্ন, সামগ্রিক ও সহযোগিতামূলক নিরাপত্তা ধারণার ওপর জোর দিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে ইউরেশিয়া ও বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘ড্রাগন ও হাতির পারস্পরিক সহযোগিতাই উভয় পক্ষের জন্য একমাত্র সঠিক অপশন।’ তিনি উল্লেখ করেন, দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।
ওয়াং ই বলেন, আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা ও বৈশ্বিক উন্নয়নে গ্লোবাল সাউথের ভূমিকা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, ‘চীন গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে তার হৃদয়ের সংযোগ বজায় রাখবে এবং মানবতার উন্নয়নে নতুন অধ্যায় রচনা করবে।’
চীন-আমেরিকা সম্পর্ক প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক সাধারণ স্বার্থ ও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চীন ও আমেরিকা অংশীদার হতে পারে এবং একে অপরকে সফল করতে পারে।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কোনও দেশই একদিকে চীনকে দমন ও নিয়ন্ত্রণ করার এবং অন্যদিকে চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতে পারে না।
চীন-জাপান সম্পর্ক প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেন, জাপানের উচিত সামরিকবাদের পুনরুজ্জীবন রোধ করা। তিনি বলেন, ‘এক চীন নীতি চীন-জাপান সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি। তাইওয়ান ইস্যুতে সমস্যা সৃষ্টি করা মানে জাপানের জন্য সমস্যা তৈরি করা।’
বিদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের সুরক্ষা প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেন, চীন ২০২৫ সালের মধ্যে বিদেশে নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্ল্যাটফর্ম গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা গভীর করা হবে।
ওয়াং ই জানান, এই শরতে চীন থিয়ানচিনে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবে। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে এসসিও দেশগুলোর নেতারা উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়ন ও সহযোগিতার ঐকমত্য গড়ে তুলবেন।