মিয়ানমারে সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভূমিকম্পে বহু ভবন ও সেতু ভেঙে পড়েছে, রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়েছে এবং অঞ্চলজুড়ে পরবর্তী কম্পনও অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সেখানে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এখন পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছে। তবে যন্ত্রপাতির অভাবে সেই তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। 

শুক্রবারের ভূমিকম্পের ফলে শহরের প্রতিটি রাস্তায় ভবন ধসে পড়েছে। হতাশ বাসিন্দারা তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ও সমতল বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বাইরে উদ্ধারকারী দল এবং সরকারের কাছ থেকে কোনও সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছেন, যা এখনও পৌঁছায়নি।

দোকান, রেস্তোরাঁ এবং চায়ের দোকান বন্ধ রয়েছে। তবে মান্দালয়ের পেট্রোল পাম্পগুলিতে ভিড় রয়েছে। ১৫ লাখের বেশি জনসংখ্যার শহরে বিদ্যুৎ না থাকায় বৈদ্যুতিক জেনারেটরের জন্য জ্বালানির প্রয়োজন হচ্ছে।

মান্দালয় থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার পূর্বে মনোরম পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত পাইন ও লুইনের দিকে অ্যাম্বুলেন্সগুলিকে দ্রুত গতিতে ছুটে যেতে দেখা গেছে। মিয়ানমারের অন্যান্য অংশ থেকে আসা দর্শনার্থী ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে এই অঞ্চল বেশ জনপ্রিয়। 

উদ্ধারকর্মী ওয়াই ফিও বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলগুলো তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিন্তু ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ এবং যথাযথ সরঞ্জামের অভাব দেখে তারা হতাশ।

ওয়াই ফিও আল জাজিরাকে বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে। আমরা তাদের জীবিত উদ্ধারের আশা করছি। কিন্তু আশা ততটা উজ্জ্বল নয়। 

উদ্ধার তৎপরতায় যোগাযোগও একটি সমস্যা। কারণ তাদের কাছে ফোন লাইন নেই। ইন্টারনেটের অ্যাক্সেসও প্রায় অসম্ভব ছিল।

ওয়াই ফিও বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সেনা পাঠিয়েছে। কিন্তু তারা সাহায্য করছে না। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মান্দালয়ের উদ্ধারকর্মীদের ধ্বংসাবশেষ সরাতে বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে যন্ত্রপাতি ধার করতে হয়েছে।

কিছু বাসিন্দা উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য সরঞ্জামের অনুদানের জন্য ফেসবুকে আবেদন করেছেন।

আল জাজিরার টনি চেং মান্দালয় থেকে জানিয়েছেন, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের বাঁচানোর সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় শহরের উদ্ধার অভিযান এখন পুনরুদ্ধারের দিকে মোড় নিচ্ছে।  

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মতে, এ ভূমিকম্পে দেশটিতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। উদ্ধার কাজ ব্যাহত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।