ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সেইসঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তির উদ্দেশ্যে আলোচনা পুনরায় শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সোমবার (৩০ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি নতুন কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তেহরান ও ওয়াশিংটন আলোচনা চালিয়ে আসছে। তেহরান বলছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। তবে ইসরায়েল ও তার মিত্ররা নিশ্চিত করতে চায় যে, ইরান যেন কোনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, ‘আমরা এমন একটি আলোচনা পুনরায় শুরুর আহ্বান জানাই, যার মাধ্যমে একটি বিস্তৃত, যাচাইযোগ্য ও স্থায়ী চুক্তি প্রতিষ্ঠিত হবে যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ নিরসনে সহায়তা করবে।’
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল এবং তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। এর ফলে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা যুদ্ধের অবসান হয়। এই ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এমন এক সময়ে শুরু হয়, যখন অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্য ইতোমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
যুদ্ধবিরতির আগেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় এবং এর জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা করে।
জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তাদের বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা সব পক্ষকে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই, যা এই অঞ্চলে আরও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ জানান, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলমান আলোচনা ‘আশাজনক’ এবং যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদী শান্তিচুক্তি নিয়ে আশাবাদী।
মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ হিসেবে ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে বিশ্বাস করা হয়। তারা বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধের লক্ষ্য হলো তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথ থেকে বিরত রাখা।
উল্লেখ্য ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির সদস্য হলেও, ইসরায়েল নয়। জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা, যা ইরানে পরিদর্শন পরিচালনা করে, জানিয়েছে, ইরানে সক্রিয় ও সমন্বিত কোনও পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির নির্ভরযোগ্য ইঙ্গিত তারা পায়নি।