ভারতের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় অন্তত ৩১ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। বুধবার (৭ মে) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)–এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাতের আঁধারে চালানো এই ‘কাপুরুষোচিত হামলায়’ আরও অন্তত ৫৭ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তান এ হামলার পাল্টা জবাব দেবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। পাকিস্তানি ডন ও জিও নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের আইএসপিআর প্রধান জানান, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) ইতোমধ্যে সশস্ত্র বাহিনীকে নিজেদের সুবিধাজনক সময়, স্থান ও কৌশল অনুযায়ী জবাব দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। তিনি জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদের বরাত দিয়ে বলেন, সীমান্ত লঙ্ঘন এবং আমাদের নিরীহ নাগরিক হত্যার প্রতিশোধে আত্মরক্ষার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীকে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী বলেন, ভারত সন্ত্রাসী প্রক্সি ব্যবহারে ব্যর্থ হয়ে এখন সরাসরি হামলায় নেমেছে। নিরস্ত্র জনগণ ও শিশুরা তাদের লক্ষ্য—এটিই প্রকৃত সন্ত্রাসবাদ নয় তো আর কী?
তিনি আরও বলেন, শত্রু এতটাই কাপুরুষ যে আমাদের সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি হতে না পেরে রাতের আঁধারে জনবহুল এলাকায় আঘাত হানে। এটা স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর প্রধান জানান, আত্মরক্ষার্থে পাকিস্তানি বাহিনী কেবলমাত্র সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ভারতের মতো নিরীহ মানুষকে লক্ষ্য করিনি। আমরা যুদ্ধনীতির প্রতি সম্মান রেখেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।
তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের বিমান বাহিনী এক পাল্টা অভিযানে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ফরাসি নির্মিত রাফালও রয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরনের আকাশযুদ্ধ খুব কমই দেখা যায়। আমাদের বিমান বাহিনী গর্ব করার মতো কীর্তি করেছে।
আইএসপিআর প্রধান ভারতের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) অতিক্রম এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বলেন, আমাদের সীমান্তে বারবার বিনা উসকানিতে হামলা ও প্রক্সি সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া ভারতের আগ্রাসী ও অস্থিরতামূলক মনোভাবেরই প্রমাণ।
তিনি বলেন, পাকিস্তান শান্তি চায়, কিন্তু আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে কোনও আপস নয়। আমাদের জনগণের নিরাপত্তা ও মর্যাদার প্রশ্নে আমরা আপসহীন।