জাপানে দুই সপ্তাহে ৯০০টির বেশি ভূমিকম্প

জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি দুর্গম ও জনবিরল দ্বীপপুঞ্জে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৯০০টিরও বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি এবং সুনামি সংক্রান্ত কোনও সতর্কতাও জারি করা হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের প্রয়োজনে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

একজন বাসিন্দা আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম এমবিসিকে বলেন, “ঘুমাতে যাওয়াটাও এখন ভয়ংকর মনে হয়। মনে হয় যেন সবসময় কাঁপছে।”

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, অতীতেও তোকারা এলাকায় অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক কম্পনগুলোর ঘনত্ব অস্বাভাবিক।

ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান। কারণ এটি প্রশান্ত মহাসাগরের তথাকথিত ‘রিং অফ ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে অনেক টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল। দেশটিতে প্রতি বছর প্রায় দেড় হাজার ভূমিকম্প হয়।

তোকারা দ্বীপপুঞ্জের ১২টির মধ্যে ৭টিতে প্রায় ৭০০ জন মানুষ বাস করেন। দ্বীপগুলোর আশপাশে কোনও হাসপাতাল নেই। নিকটতম হাসপাতালটি রয়েছে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টার ফেরি যাত্রার দূরত্বে, কাগোশিমা প্রদেশের রাজধানীতে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তোশিমা গ্রামের কিছু বাসিন্দা অতিরিক্ত চাপ এবং ঘুমহীনতায় ভুগছেন। তারা মিডিয়াকে অনুরোধ করেছেন যেন স্থানীয়দের অতিরিক্ত প্রশ্ন বা সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিব্রত না করা হয়।

এছাড়া তোকারা দ্বীপপুঞ্জের কিছু অতিথিশালা পর্যটকদের গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ ভবিষ্যতে সেগুলো স্থানীয়দের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

এই ভূমিকম্পের ধারা এমন সময়ে দেখা দিচ্ছে, যখন দেশজুড়ে কমিক বইয়ের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে এক ‘ভয়ংকর ভূমিকম্প’ আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তবে দশকের পর দশক ধরে জাপান সরকার আশঙ্কা করে আসছে সেই বড় ভূমিকম্পের, যা শতাব্দীতে একবার ঘটে থাকে। মহাভূমিকম্প, যা নিয়ে মানুষ ছোটবেলা থেকেই জাপানিরা সতর্কতা শুনে এসেছে।

ফলে এই সপ্তাহের শুরুতে সরকার নতুন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যেমন: নিরাপদ আশ্রয়স্থল নির্মাণ, যাতে এমন দুর্যোগের ক্ষেত্রে জনগণ প্রস্তুত থাকতে পারে।

সূত্র: বিবিসি