চীনে রেকর্ড মাত্রায় কমেছে জন্মহার

চীনে রেকর্ড মাত্রায় কমেছে শিশু জন্মহার। সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যার ব্যুরো-র ডাটায় দেখা যায়, ২০২১ সালে দেশটির মূল ভূখন্ডে প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল ৭ দশমিক ৫২। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

ওই ডাটা প্রকাশের পর দেশটির জন্মহারের নিম্নগামী প্রবণতার দিকটি নতুন করে সামনে উঠে এসেছে।

গত কয়েক বছর ধরে এমন নিম্নগামী প্রবণতার ফলে ২০২১ সালে দম্পতিদের তিনটি পর্যন্ত সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ।

বহু দশক ধরে কঠোরভাবে 'এক সন্তান নীতি' অনুসরণের পর ২০১৬ সালে চীন তা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে জানায়, সব দম্পতি দুইটি করে সন্তান নিতে পারবেন। কিন্তু এরপরও জন্মহার স্থায়ীভাবে বাড়েনি। বরং শহরগুলোতে সন্তান বড় করার ক্রমবর্ধমান খরচ বহু চীনা দম্পতির জন্য একটা বড় অন্তরায় হিসাবে কাজ করেছে।

এমন বাস্তবতায় ২০২১ সালে তিনটি পর্যন্ত সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার ঘোষণা আসে।

পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং। তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জটি সুপরিচিত। কিন্তু জনসংখ্যার বার্ধক্যের গতি স্পষ্টতই প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুততর।’

২০২১ সালে রেকর্ড মাত্রায় জন্মহার কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চীনে জন্মহার ধারণার চেয়েও দ্রুত গতিতে কমছে।

২০২০ সালে যেখানে ১২ মিলিয়ন শিশুর জন্ম হয়েছে সেখানে ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ১০ দশমিক ৬২ মিলিয়ন।

২০২০ সালে জন্মহার ছিল প্রতি হাজারে ৮ দশমিক ৫২ জন। এক বছরের মাথায় সেটি কমে ৭ দশমিক ৫২-এ পৌঁছেছে।

২০১৬ সালে যখন চীন বিতর্কিত এক সন্তান নীতির অবসান ঘটিয়ে দম্পতিদের দুই সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়, তখন নীতি পরিবর্তনের পর দুই বছর জনসংখ্যা বাড়লেও তা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ইকোনমিস্ট ইন্টালিজেন্স ইউনিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ মিজ ইউয়ে সু-এর মতে, ‘দুই সন্তান নীতির একটা ইতিবাচক প্রভাব জন্মহারের ওপর পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেটা ছিল স্বল্পমেয়াদী।’

জন্মসংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকাতে ১৯৭৯ সালে যে এক সন্তান নীতি চালু করা হয়েছিল, দীঘদিন চালু থাকা সেই নীতির প্রভাব দেখা গেছে জনসংখ্যা কাঠামোয়। কঠোর সেই নীতি না মানলে জরিমানার বিধান ছিল, আইন অমান্যকারীদের শাস্তি হিসেবে চাকরিচ্যুত করা হতো এবং কখনও কখনও বাধ্যতামূলক গর্ভপাতও করা হতো। ওই আইনের ফলে নারী পুরুষের সংখ্যায় ভারসাম্যের বিশাল অভাব তৈরি হয়েছে। দেশটিতে এমনিতেই ঐতিহাসিকভাবে পুরুষদের প্রাধান্য নারীদের চেয়ে বেশি। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।