চীনে পুলিশি দমনপীড়নের মুখে স্তিমিত হয়ে পড়ছে বিক্ষোভ

চীনে পুলিশি দমনপীড়নের মুখে দেশটির সাম্প্রতিক বিক্ষোভ স্তিমিত হয়ে পড়েছে। গত শনি ও রবিবার কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে এসব বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই পুলিশের কাছ থেকে ফোন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

পুলিশি বাধার কারণে সোমবার বেইজিংয়ের পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভে অংশ নিতে পারেনি আন্দোলনকারীরা। লোকজন জড়ো হওয়ার আগেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য জায়গাটি ঘিরে রাখে। দেশের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের প্রধান সড়কটির পাশে বিশাল আকারের প্রতিবন্ধক বসানো হয়। আইন না ভাঙতে আন্দোলনকারীদের সতর্ক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

অনলাইনে লোকজনকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল; এমন স্থানগুলোতে মঙ্গলবার পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে। এর আগে সোমবার রাতে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাংজু শহরে একটি ছোট আকারের বিক্ষোভ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে হানা দেয় পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় তারা।

রাজধানী বেইজিংয়ের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ফোন করে তাদের অবস্থানের তথ্য জানতে চেয়েছে পুলিশ। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ঠিক কিভাবে তাদের শনাক্ত করেছে সেটি স্পষ্ট নয়।

বিবিসির খবরে বলা হয়, পুলিশ লোকজনের কাছ থেকে তাদের ফোন নিয়ে সেগুলো যাচাই করে দেখছে। ফোনে ভিপিএন, টেলিগ্রাম বা টুইটারের মতো অ্যাপ রয়েছে কিনা সেটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এদিকে চীনে বিক্ষোভের খবর সংগ্রহের সময় বিবিসির একজন সাংবাদিককে গ্রেফতার ও নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে যুক্তরাজ্য। এ ঘটনায় মঙ্গলবার লন্ডনে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে দেশটি।

রবিবার রাতে রাতে বিক্ষোভের ছবি তোলার সময় লরেন্স নামের ওই সংবাদিককে গ্রেফতার করে চীনা পুলিশ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বিক্ষোভ দমনে চীনের আচরণের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, বেইজিং নিজের জনগণের কথা শোনার বদলে তাদের ওপর আরও দমনপীড়ন চালাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, চীনের মানুষের কোভিড লকডাউনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। তাদের এই অধিকারকে সমর্থন করে ওয়াশিংটন। লোকজনকে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ দেওয়া উচিত।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়া জানাতে আমরা কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাই। শান্তিপূর্ণভাবে নিজের মতামত প্রকাশের জন্য কাউকে নির্বিচারে আটক করা উচিত নয়।’