গ্রিসের চিওস দ্বীপে শরণার্থী শিবিরে ফের হামলা

_92499101_soudatentsunhcr18novগ্রিসের চিওস দ্বীপের শরণার্থী শিবিরের তাঁবু লক্ষ্য করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা, আতশবাজি ও পাথর নিক্ষেপ করে ফের হামলা চালিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে প্রায় ১৫০ লোক শিবির ছেড়ে পালিয়ে যান। সোউদা নামের এই ক্যাম্পে এই নিয়ে দ্বিতীয় রাতের মতো সহিংস ঘটনা ঘটল। চিওসে প্রায় ৪ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থী রয়েছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, সহিংস এই হামলায় বেশ কয়েকটি তাঁবুর ক্ষতি হয়েছে। এগুলোতে প্রায় ৫০ শরণার্থী বাস করছেন।

ইউএনএইচসিআর এর গ্রিস শাখার মুখপাত্র রোনাল্ড স্কোয়েনবাউয়ার বলেন, ‘শুক্রবার সোউদা শরণার্থী শিবিরের দেয়ালের ওপারে কে বা কারা পাথর ছুড়ে মারে। পাথরটি এক সিরীয় শরণার্থীর মাথায় আঘাত করে এবং তিনি গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।

স্কোয়েনবাউয়ার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে শরণার্থী শিবিরে বেশ কয়েকটি ককটেল ছোঁড়া হয়। এতে বেশ কয়েকটি তাঁবু ধ্বংস হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা সেখান থেকে পালিয়ে এসেছে। এখন তাদেরকে বুঝিয়ে সেখানে ফেরত পাঠানো আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।’

সরকার পরিচালিত শরণার্থী শিবিরটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছে। শিবিরে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং ইউএনএইচসিআর এখনও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বা ক্ষতিগ্রস্ত ও সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া তাঁবুগুলোর পরিবর্তে নতুন তাঁবু স্থাপন করতে পারেনি।

স্কোয়েনবাউয়ার বলেন, ‘শিবিরের বাইরে স্বেচ্ছাসেবীরা ছোট ধরনের তাঁবু স্থাপনে সহায়তা করছে।’ তিনি ওই এলাকায় টহল জোরদারের জন্য গ্রিসের পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

স্কোয়েনবাউয়ার জানান, শরণার্থীদের মাঝে নতুন কম্বল, স্লিপিং ব্যাগ ও অন্যান্য উপকরণ বন্টন করা হয়েছে।

ইউএনএইচসিআর চিওস কর্তৃপক্ষকে শরণার্থীদের জন্য নতুন বাসস্থান খুঁজতে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছে।

গ্রিসের পুলিশ জানিয়েছে, হামলার পর ৪ শরণার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত চারজনই পুরুষ। এদের মধ্যে ৩ জন আলজেরিয়ান ও একজন ইরানি। একটি দোকান থেকে আতশবাজিগুলো চুরি করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ১৬ হাজারের বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী রয়েছেন।

বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে এই সহিংস হামলার সঙ্গে গ্রিসের কট্টর-ডানপন্থী জঙ্গিদের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। সোউদা শিবিরে আশ্রয় নেয়া অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ সিরীয়, ২০ শতাংশ ইরাকী, ১০ শতাংশ উত্তর আফ্রিকান ও ১০ শতাংশ অন্যান্য দেশের নাগরিক। সূত্র: বিবিসি।

/এএ/