তুরস্কে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা কাতারের

অস্থির হয়ে ওঠা তুরস্কের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে ১ হাজার ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে কাতার। বুধবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি নতুন বিনিয়োগের এই ঘোষণা দেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে সম্প্রতি দেখা দেওয়া কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে কাতারের আমিরই প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি তুরস্ক সফর করলেন।তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও কাতারের আমির

দীর্ঘ সময় ধরে ডলারে ঋণ নেওয়ার পর এখন সেসব ঋণ ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য নেই তুরস্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর। দেশটির মুদ্রা লিরা দ্রুত মূল্য হারাচ্ছে। ফলে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। অবস্থা সামাল দিতে এরদোয়ান দেশবাসীকে ডলার বিক্রি করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন পণ্য বয়কটেরও। এদিকে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তুরস্ক সন্ত্রাসের অভিযোগে যে খ্রিস্টান ধর্মযাজককে গ্রেফতার করেছে তার মুক্তি দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ধর্মযাজককে গ্রেফতার করায় তুর্কি স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তার ওপর তুর্কি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের ওপর বর্ধিত হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আল জাজিরা লিখেছে, আগে থেকেই ঝুঁকিতে থাকা তুর্কি অর্থনীতি ঝাঁকুনি খেয়েছে মার্কিন সিদ্ধান্তে।

বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এরদোয়ান ও শেইখ তামিম দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও আঞ্চলিক উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের বৈঠক চলেছে প্রায় তিন ঘণ্টা। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, ‘এ সফরকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এ সফর এটাই প্রমাণ করে, কাতার তুরস্কের পাশে আছে।’ তুরস্কে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সালিম বিন মুবারাকা আল শাফির কণ্ঠেও একই সুর। তিনিও তুরস্কের পাশে থাকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই সফর তুরস্কের সঙ্গে কাতারের ‘গভীর সম্পর্কেরই প্রমাণ।’ তার ভাষ্য, ‘২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সময় যেমন কাতার তুরস্কের পাশে ছিল তেমন করে ভবিষ্যতেও তুর্কি ভাইদের পাশে থাবে কাতার। তুরস্ককে অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে বের করে আনতে কাতারের নাগরিকরা প্রচুর পরিমাণে তুর্কি লিরা কিনেছে।’

আল জাজিরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে কাতার ও তুরস্ক এক সূত্রে বাধা। কিন্তু কাতারের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করতে দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিটি ওয়াশিংটনের কাছে  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।