জাহাজ জব্দে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে বিক্ষোভ

ক্রিমিয়া উপকূলে রাশিয়া ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ জব্দ করার ঘটনায় সে দেশের রাজধানী কিয়েভে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রুশ দূতাবাসের সামনে জড়ো হন। এ সময় তারা দূতাবাসের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

ukraine

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ক্রিমিয়া উপসাগরীয় অঞ্চলে জাহাজ জব্দের ঘটনায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার উত্তেজনা চরমে নিয়ে গেছে। এর ফলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে।

রবিবার মধ্যরাতে দেড় শতাধিক প্রতিবাদকারী কিয়েভে রাশিয়ার দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় অনেকেই আগুনের ফুলকি ছুড়ে মারেন দূতাবাস ভবনের দিকে। বিক্ষোভকারীরা দূতাবাসের অন্তত একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ওলেকসি রিয়াভব নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, রাশিয়ার পদক্ষেপের প্রতিবাদ করতে আজ আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। তারা আমাদের সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। আমরা খুবই ক্ষুব্ধ। এই দেশটির সঙ্গে আমাদের অনেক আগেই সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার উচিত ছিল।

এদিকে, ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পোরোশেঙ্কো রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে বিনা উসকানিমূলক ও উন্মত্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, সোমবার পার্লামেন্টে তিনি সামরিক আইন জারি করার আহ্বান জানাবেন। তবে তিনি বলেছেন, এর অর্থ এই নয় যে এটা যুদ্ধের ঘোষণা। আমরা কারও যুদ্ধের পরিকল্পনা করছি না।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওই সময় থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কেরও অবনতি হয়। রবিবার রাশিয়া ইউক্রেনের বারডিযানস্ক এবং নিকোপল যুদ্ধজাহাজ এবং দি ইয়ানা কাপা জাহাজ জব্দ করেছে। এসময় রাশিয়া গুলিও চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া জাহাজের পথ আটকাতে চেষ্টা করে, যদিও এরপর নৌযানগুলো কের্চ স্ট্রেইটের উদ্দেশ্যে চলছিল কিন্তু ট্যাংকার দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়।

রাশিয়া ওই এলাকাতে দুটো যুদ্ধবিমান এবং দুটো হেলিকপ্টার ডেকে আনে। তাদের অভিযোগ নৌযানগুলা অবৈধভাবে তাদের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল এবং ওই পথে চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে নিরাপত্তার কারণে।

ইউক্রেনের নৌবাহিনীর সদস্যরা জানান জাহাজ হামলা মুখে পড়লে তারা ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তাদের ছয়জন নাবিক আহত হয়ে বলেও জানানো হয়। রাশিয়ার কর্মকর্তারা অবশ্য পরে নিশ্চিত করেন যে তাদের একটি টহল জাহাজ তিনটি ইউক্রেনের জাহাজকে জোর করে জব্দ করে তবে তাদের দাবি কেবল তিনজন নাবিক আহত হয়েছেন।